গৃহকর্মী আদুরির ক্ষতে সংক্রমণ :নির্যাতনকারী রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী আদুরির শরীরে পোড়া ও কাটা ক্ষতে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিত্সাধীন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আদুরির চিকিত্সার্থে গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এইচ এ এম নাজমুল আহসানকে প্রধান করে সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
ওসিসির সমন্বয়কারী ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য বিলকিছ বেগম বলেন, আদুরির মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা ও পোড়া ক্ষতচিহ্ন আছে। ডাস্টবিনে পড়ে থেকে আদুরির ক্ষত স্থানে সংক্রমণ (ইনফেকশন) দেখা দেয়। সে অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায়ও ভুগছে। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হলেও শারীরিক দুর্বলতার কারণে স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারছে না।
হাসপাতাল সূত্র জানায়,শনিবারই মেডিকেল বোর্ড তার চিকিত্সাসেবা শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকেরা তার স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন পরীক্ষা করিয়েছেন। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী চিকিত্সা করা হবে।
বিছানার পাশে মেয়ের শরীরে নির্যাতনের ক্ষত দেখে আদুরির মা সুফিয়া বেগম ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। তিনি বলেন, ‘সংসার চলে না, কোনো উপায় না দেইখ্যা দুই মাইয়ারে ঢাকায় কাজে দেছেলাম। আদুরিরে ৫০০ টাহা মাসিক ব্যাতন দেওয়ার কথা থাকলেও ওরা এক টাহাও দেয় নাই আমারে। ওরা আমার মাইয়াডারে এমনভাবে নির্যাতন করল ক্যান? বাড়িতে ফেরত পাডাইয়া দেত।’ তিনি আদুরির ওপর নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
গত রোববার বিকেলে বারিধারার ডিওএইচএস এলাকার একটি ডাস্টবিনে দুই নারী প্রায় নিস্তেজ অবস্থায় শিশু আদুরিকে (১১) উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিত্সাসেবা পেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠে সে।
আদুরি জানায়, গৃহকর্ত্রী তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করত। ব্লেড দিয়ে তার শরীরে কেটে দেয় এবং আয়রন (ইস্ত্রি) দিয়ে ছ্যাঁকা দিত। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর জৈনকাঠিতে।