গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়াকে তুলে দেয়া হলো মায়ের কোলে
জন্মের ২৩ দিন পর গর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়াকে তুলে দেয়া হলো মায়ের কোলে। রোববার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে ৪৮ নম্বর কেবিনে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় শিশু সুরাইয়াকে।
জন্ম দেয়ার পর আজই প্রথম ছোট্ট শিশু সুরাইয়াকে কোলে নিলেন মা নাজমা বেগম। আনন্দে বুকে জড়িয়ে ধরেন শিশুটিকে। অশ্রুসিক্ত কন্ঠে তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, দোয়া করেন, মেয়ে যেন আমার সুস্থ থাকে। অনেক দিন বাড়ি যাই না, জলদি মেয়েকে নিয়ে যেন বাড়ি ফিরতে পারি।
মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রাখা হয়। দুপুরে তাকে পুরাতন ভবনের কেবিনে চিকিৎসাধীন মা নাজমা বেগমের কোলে তুলে দেন চিকিৎসকেরা। এ সময় ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ডা. আবদুল হানিফ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলিসহ আরো বেশ কয়েকজন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক আবদুল হানিফ বলেন, আমরা আজকে বাবুকে মায়ের কাছে দিয়েছি। আগে মা দিনে কয়েকবার এসে আউসিইউতে বাবুকে বুকের দুধ খাইয়ে যেতেন। কিন্তু রাতে আসতে পারতেন না। তিনি বলেন, শিশুটির অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো। এ ছাড়া ওজনও এখন বাড়তে শুরু করেছে।
শিশুটি আশঙ্কামুক্ত কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক আবদুল হানিফ বলেন, আসলে শিশুটি প্রিম্যাচিউর হওয়ায় একটা ইনফেকশনের ভয় থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে আমরা কেবিনে তিনজন নার্সের ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া বাইরের লোক যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে নজর রাখা হয়েছে। আগামী বুধবার শিশুটির চোখ পরীক্ষা করা হবে বলে জানান তিনি।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২৩ জুলাই বিকেলে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ে যুবলীগের দুই গ্রুপের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম (৩০) ও চাচা মোমিন ভূঁইয়া গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমার গুলিবিদ্ধ শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। পরদিন রাতে মাগুরা সদর হাসপাতালে মোমিন ভূঁইয়া মারা যান। দুদিন পর গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে নাজমাকেও ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।