গর্ভস্থ ভ্রুণ হত্যার ব্যবসা জমজমাট ভারতে

07/07/2014 6:03 pmViews: 7
 গর্ভস্থ ভ্রুণ হত্যার ব্যবসা জমজমাট ভারতে
ভারতে গর্ভস্থ ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ ও হত্যা অবৈধ হলেও চলছে এর জমজমাট ব্যবসা। পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনীতিকদের যোগসাজশে চলছে এমন নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড। ফলে দেশটিতে ছেলে-মেয়ের লিঙ্গ অনুপাতের ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে।

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে লিঙ্গ অনুপাতের তফাত বিশ্বে সব থেকে বেশি। ফলে বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে মেয়ে পাচারের হার। গরিব মা-বাবা টাকার লোভে ছোট ছোট মেয়েগুলোকে বিক্রি করছেন নারী পাচার চক্রের দালালদের হাতে। তারা হয়ে উঠছে যৌন সামগ্রী। সমাজে এই ধরনের মেয়ে বেচা-কেনা একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের হাতে যা ধরা পড়ছে, তার সংখ্যা খুবই নগণ্য। পুলিশ সাধারণত এসব ব্যাপারে মাথা ঘামায় না।

পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত দু’দশকে ১ কোটি ২০ লাখ কন্যা ভ্রুণের মধ্যে ১ কোটি কন্যাসন্তান তাদের প্রথম জন্মদিন দেখতে পায় না । ২০১১ সালের জনসংখ্যা গণনায়, প্রতি হাজারে মেয়ের সংখ্যা নেমে আসে ৮৭৪-এ জাতীয় হারের নিচে। জাতীয় হার ৯১৪। যেটা ২০০১-এর গণনায় ছিল ৯২২।

এর অন্যতম কারণ ভারতের বিভিন্ন শহরে দিনকে দিন বেড়ে চলেছে আল্ট্রা-সাউন্ড ও সোনোগ্রাফির নামে গর্ভস্থ ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ ক্লিনিক। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে এর অবৈধ মোটা টাকার ব্যবসা।

এর জন্য মূলত দায়ী কে? অল্পবিস্তর সবাই। ডাক্তার থেকে রাজনীতিক, পুলিশ থেকে স্থানীয় প্রশাসন। এর সামাজিক ফল কী হচ্ছে? আগামী ২০ বছরের মধ্যে ছেলের জন্য পাত্রী পাওয়া মুশকিল হবে। আর সামাজিক কারণ হিসেবে পণপ্রথাকে দায়ী করেছেন এনজিও এবং সমাজবিজ্ঞানীরা।

এ থেকে বাঁচার উপায় কি হতে পারে? বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, হাতেনাতে ধরতে হবে কোন ক্লিনিকে চলছে অবৈধ লিঙ্গ নির্ধারণ এবং কন্যাভ্রুণ হত্যা। এটা করা যেতে পারে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সাহায্যে ‘স্টিং-অপারেশন’ চালিয়ে। ডাক্তাররা এজন্য সংকেত ব্যবহার করে। যেমন, আল্ট্রা-সাউন্ড করার পর ডাক্তার নীল কাপড় কিনতে বললে বুঝতে হবে ভ্রুণ ছেলে। আর গোলাপি কাপড় কেনার কথা বললে বুঝতে হবে ভ্রুণ মেয়ে। এদিকটাও লক্ষ্য রাখা উচিত। এছাড়া দরকার সামাজিক মানসিকতায় বদল। কন্যাভ্রুণ হত্যা বন্ধে আরো কঠোর আইন ও শাস্তির বিধান থাকা উচিত। চিকিৎসকদেরও বিবেককে জাগ্রত করা উচিত।

সূত্র: ডি ডব্লিউ

Leave a Reply