গণমাধ্যমের কাছে ক্ষমা চাইলেন এমপি রনি
ঢাকা: অবশেষে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। সাংবাদিক পেটানোর ঘটনায় গ্রেফতার হবার আগে দেওয়া একটি বিবৃতিতে রনি এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তবে বিবৃতিটি আগে দেওয়া হলেও এটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয় বৃহস্পতিবার। আর তা গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনু।
সেদিনের ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও বিবৃতিতে তিনি দাবি করেছেন তিনি আসলে এ ঘটনায় ‘পরিস্থিতির শিকার’। এর মধ্য দিয়ে গোলাম মাওলা রনি বিবৃতিতে নিজের স্ববিরোধী মনোভাবেরই প্রমাণ দিলেন।
এক জায়গায় তিনি বলছেন, ঘটনার দায় পুরোপুরি তার। আবার অন্য জায়গায় বলছেন তিনি পরিস্থিতির শিকার।
বিবৃতিতে রনি বলেন, ‘এই ঘটনায় সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে অসংযত আচরণের দায় পুরোপুরি আমার। গণমাধ্যমে যুক্ত/কর্মরত যেসব সাংবাদিক বন্ধু এ আচরণে ক্ষুব্ধ আমি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এর মাধ্যমে এই অধ্যায়ের অবসান ঘটবে বলে আশা করছি।’
নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী, অনুগত ও নিবেদিত প্রাণ এক কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতেও আমি কখনও এ থেকে বিচ্যুত হব না। আমার রাজনৈতিক শিক্ষা এবং অনুপ্রেরণার উৎস জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর স্পষ্টবাদিতা এবং সাহস আমার পাথেয়। আর রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও গতিশীল এবং নিরাপদ করাই আমার লক্ষ্য।’
নিজের লেখালেখির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রনি বলেন, শিক্ষাজীবন শেষে আমি গণমাধ্যমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হই। কিছু সময় প্রবাসে এবং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় লেখালেখিতে ছেদ পড়ে। পরিচিতিজনদের আগ্রহ, উৎসাহ ও সহযোগিতায় বেশ কিছুদিন হলো আবারও লেখালেখি শুরু করেছি। টেলিভিশন অনুষ্ঠান বিশেষ করে টক শোতেও নিয়মিত অংশ নিচ্ছি।
রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকের মতো আমিও এটা মনে করি।এই সমাজে স্পষ্ট কথা বলা/লেখার লোকের সংখ্যা দ্রুত কমছে। এ অবস্থায় আমার লেখায়/ আলোচনায়/ বক্তব্যে প্রশংসা ও তিরস্কার দুটোই জুটেছে। নানা বিষয়ে মতপার্থক্য এবং দৃষ্ঠিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে সম্প্রতি আমি এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হই।
নিজেকে ‘পরিস্থিতির শিকার’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার পূর্বাপর বিশ্লেষণে বোঝা যাবে আমি মূলত: পরিস্থিতির শিকার। বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। আমি আবারও এ বিষয়ে পরিষ্কার বলতে চাই যে, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত এসব অভিযোগের একটিরও সত্যতা মিললে আমি তাৎক্ষণিকভাবে রাজনীতি থেকে চিরদিনের মতো দূরে সরে দাঁড়াবো।
সবার সহযোগিতা এবং দোয়ায় ভবিষ্যতেও বরাবরের মতো দুর্নীতি, অপশাসনের বিরুদ্ধে লেখালেখি/ আলোচনা চালিয়ে যাবেন বলেও বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন তিনি।