খালেদার বক্তব্য প্রত্যাহার না হলে ব্যবস্থা: আশরাফ

21/01/2014 8:10 pmViews: 8
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা: সাতক্ষীরায়  যৌথ বাহিনীর অভিযান সম্পর্কে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিযারি দেন তিনি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর অভিযান সম্পর্কে গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “আপনারা দেখেছেন কীভাবে মানুষকে নির্যাতন করেছে। আদৌ যৌথ বাহিনী ছিল কি না, সেটা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের পুলিশ ও অন্য বাহিনী এত নিষ্ঠুর হবে, এটা নিয়ে মানুষের সন্দেহ রয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, “সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ভারতীয় বাহিনী অংশ নিয়েছে, দৈনিক ইনকিলাব এমন সংবাদ ছাপিয়ে  আবার ভুল স্বীকার করে সংবাদ ছেপেছে। অথচ বিএনপির চেয়ারপারসন ইনকিলাবের ক্ষমা চাওয়ার বিষয় তুলে ধরেননি।”

খালেদার বক্তব্য  কোনো দায়িত্বপূর্ণ নেত্রীর কি না প্রশ্ন রেখে আশরাফ বলেন, “তার এ কথাটা কিন্তু ভয়ংকর। তিনি কি যুদ্ধ চান? তার কাছ থেকে এ ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহ বক্তব্য আশা করি না। আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীই যথেষ্ট।”

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার  আহ্বান জানিয়ে আশরাফ বলেন, “ইনকিলাব যেভাবে ভুল স্বীকার করেছে, ক্ষমা চেয়েছে, আপনিও সেভাবে ক্ষমতা চাইবেন।”

আশরাফুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির  নেত্রী অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতকে আড়াল করেছেন। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, জামায়াতের নেতৃস্থানীয় নেতারা ছাড়া বিশালসংখ্যক অস্ত্রধারী শিবির ক্যাডার সমাবেশে উপস্থিত ছিল।”

খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাসের প্রধান সেনাপতি উল্লেখ করে আশরাফ বলেন, “তাদের শাসনামলে যত সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদি হামলা হয়েছে, এর পেছনে ছিলেন খালেদা জিয়া। সব জায়গায় খালেদা জিয়ার মদদে জঙ্গি হামলা হয়েছে। আমরা আশা করি না, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার করবেন; তার দলের ও শিবির ক্যাডারদের সন্ত্রাসে উৎসাহিত করবেন।”

আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, “বিএনপির লেজ কে, আর মাথা কে, তা এখন কেউ জানে না। এক দলে তাদের দুই মত। দুই হাইকমান্ড। এখন তাদের দুই মাথাওয়ালা রাজনীতি।”

আশরাফ আরো বলেন, “বিএনপিতে বাম যা চায়, ডান তাতে রাজি না; আবার ডান যা চায়, বাম তাতে রাজি না। তাদের দলের কেন্দ্রবিন্দু কোথায়, বাংলাদেশের মানুষ তা জানতে চায়।”

বিএনপির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “তারেক রহমান বলছেন, এই সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়। আবার খালেদা জিয়া বলছেন, আলোচনা করতেই হবে। তারা সব সময় মানুষকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রাখতে অভ্যস্ত।”

নির্বাচনের আগে আলোচনায় বসার জন্য খালেদা জিয়াকে টেলিফোনে শেখ হাসিনার আমন্ত্রণের কথা উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম, শেখ হাসিনার আহ্বানে খালেদা জিয়া ইতিবাচক সাড়া দেবেন। আলোচনার পথ সুগম করবেন। অথচ আমন্ত্রণ তিনি গ্রহণ করেননি। সত্যিকার অর্থেই তারা আর কোনো আলোর মুখ দেখছেন না।’

বিএনপির জন্মই হয়েছে মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে্- এমন দাবি করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “খালেদা জিয়া অনর্গল মিথ্যা বলতে পারেন। যতই মিথ্যা বলে সত্যকে আড়াল করতে চান না কেন, তা আর সম্ভব হবে না।”

আশরাফুল ইসলাম বিএনপির উদ্দেশে বলেন, “তারা (বিএনপি) নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে তারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। গরু, ছাগল ও মুরগি পুড়িয়েছে, গাছ ধ্বংস করেছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কোনো বিশেষ দেশের রাষ্ট্রদূতের ক্ষমতা নাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের। গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোনো মুরব্বির ক্ষমতা নাই সোনার বাটিতে করে ক্ষমতার রসগোল্লা খাইয়ে দেবে। তিনি (খালেদা) কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন। ক্ষমতায় আসতেও ব্যর্থ হয়েছেন। আশা করি, এ শিক্ষা থেকে ভবিষ্যতের শিক্ষা গ্রহণ করবেন।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

Leave a Reply