খালেদাকে ফেলে পালিয়ে গেলেন নেতারা!
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের তৎপরতা দেখে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফেলে পালিয়ে গেলেন বিএনপি নেতারা। সোমবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীরা এ কথা জানান।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে আটক করে পুলিশ। টুকু নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতেই ছিলেন। পুলিশ তাকে টেনে হিঁচড়ে নামায়। এ সময় ওই গাড়ির পাশের জানালার কাচ ও পেছন দিকে ভাঙচুর করা হয়। তখন খালেদা জিয়ার গাড়ি সেখানে আটকে ছিল, তিনি গাড়ির মধ্যেই ছিলেন।
জানা গেছে, সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রিজভীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেয়া শেষে রাত ১১টা ১০ মিনিটে অফিসের নিচে নামেন তিনি। এ সময় সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে আটকের ঘটনার শুরুতেই উপস্থিত বিএনপি নেতারা পালিয়ে যান।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দলের যুগ্ম-মহাসচিব এবং দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অবরুদ্ধ অবস্থায় মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তাকে দেখতে নেত্রী কার্যালয়ে আসেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় তার আগমনের খবর পেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা পল্টনের অফিসে আসতে শুরু করেন। এরপর রাত ১১টায় কার্যালয়ে পৌঁছান বেগম জিয়া।
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার থেকে রিজভীকে কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ করে রেখেছে পুলিশ।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, সহসভাপতি সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, সাংবাদিক শফিক রেহমান, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সাংসদ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলেল সভাপতি হাবিব উন নবী খান, সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ছাত্র দলের সিনিয়র সহসভাপতি বজলুল করীম চৌধুরী আবেদ প্রমুখ।
এদিকে খালেদা জিয়া নয়া পল্টনের কার্যালয়ে আসবেন, এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বিরোধী দলীয় নেতা কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা শ্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়।
বেগম জিয়া কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছালে উপস্থিতি আরও কিছুটা বাড়তে শুরু করে। এ সময় তিনি অসুস্থ রিজভীর সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট আলাপ করেন। পরে খালেদা জিয়া গাড়িতে ওঠার পর রাত ১১টা ২০ মিনিটে পুলিশের গায়ে তার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গাড়ির (ঢাকা মেট্রো চ ৫৩৫৪৩১) ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যাযে গাড়িতে থাকা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে গাড়ির কাচ ভেঙে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে আটক করে পল্টন থানা পুলিশ। এ সময় আশেপাশে থাকা বাকি নেতারাও স্থান ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খালেদা জিয়ার আসার কথা শুনে নয়া পল্টনে প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী উপিস্থিত হন। টুকুকে আটকের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তারা যে যার মতো পালিয়ে যান। এ সময় যারা কার্যালয়ের ভেতরে ছিলেন, পরে তারা সটকে পড়েন।
আকস্মিক ওই ঘটনা চলা অবস্থায় কার্যালয় এলাকায় খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর অবস্থান করছিল। পরে রাত ১১টা ৩৪ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর গুলশানের উদ্দেশে চলে যায়।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় র্যাব-পুলিশ অবস্থান করছে।