ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে।
ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে। গত কয়েক মাস ধরেই তার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। রাজধানী কলম্বোসহ দেশের প্রধান শহরগুলিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে। কিন্তু এরপরেও ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজাপাকসে। তার দাবি, তিনি এখন পুননির্বাচন নয় বরঞ্চ দেশের অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে মনযোগ দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বিজনেস স্টান্ডার্ড।
খবরে জানানো হয়, রাজাপাকসের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হতে আরও দুই বছর বাকি রয়েছে। এক বিদেশী গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি একজন ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদত্যাগ করতে পারি না। এটিই শ্রীলঙ্কার চলমান সংকট সৃষ্টির পর আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে রাজাপাকসের প্রথম সাক্ষাৎকার। এতে তিনি বলেন, আমাকে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। তবে এরপরে আমি আর নির্বাচনে দাঁড়াব না।
দেশটির চলমান সংকটের জন্য রাজাপাকসে পরিবারকেই দায়ী করছে বিক্ষোভকারীরা।
যদিও গত মে মাসে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে। মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে রাজাপাকসে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও। কিন্তু প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত থামছে না আন্দোলনকারীরা। তারা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কাছে ক্যাম্প করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
গোটাবাইয়া রাজাপাকসে এবং তার নতুন প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহে এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার সাহায্য চাইছে। এছাড়া ভারত ও চীনের কাছেও সাহায্য চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির মুদ্রা গত এক বছরে ৮২ শতাংশ দাম হারিয়েছে। গোয়াটাবাইয়া জানিয়েছেন, তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে এর আগে যে সফলতা দেখিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তার পুনরাবৃত্তি করতে চান। তিনি একসময় শ্রীলঙ্কার শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান ছিলেন। ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রীও।
রাজাপাকসে পরিবারের দুই ভাই ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার ৩০ বছরের গৃহযুদ্ধ শেষ করেন। ২০১৯ সালে এক সংবিধান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে পার্লামেন্টের উপরে ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। তবে এবার সেটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। যদিও রাজাপাকসে এই পরিবর্তন নিয়ে সন্দেহ জানিয়েছেন। এই পরিবর্তন এলে পার্লামেন্টের কাছে বেশ কিছু ক্ষমতা চলে যাবে, যা এতদিন প্রেসিডেন্টের কাছে ছিল। গোটাবাইয়া এ নিয়ে বলেন, কোনো মিশ্র পদ্ধতি চলতে পারে না। হয় প্রেসিডেন্সী বলে কিছু থাকবে না কিংবা পার্লামেন্টকে শাসন ক্ষমতা থেকে দূরে থাকতে হবে। আমার এই কথা শুনে মানুষ হয়তো আমাকে দোষ দেবে। কিন্তু এটাই বাস্তবতা।
সাক্ষাৎকারে গোটাবাইয়া জানান কীভাবে তিনি শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, আমি ভারত এবং চীন উভয়ের কাছে সাহায্য চেয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং চিঠি লিখেছি। এছাড়া কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সঙ্গেও সরাসরি কথা বলেছি। সামনে সৌদি আরব এবং ওমানের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছে আছে আমার। তেলের চাহিদা মেটাতে তাদের সাহায্য দরকার।