ক্যান্সার প্রতিরোধে লাইকোপিন
লাইকোপিন কিছুটা কম পরিচিত ক্যারোটিনয়েড। তবে দিন দিন এর গুরুত্ব অনুধাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে দেহ থেকে ফ্রি রেডিক্যাল দূর করতে এর দক্ষতা একে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে আমাদের কাছে। আমরা গত দশকেই লাইকোপিন সম্পর্কে জানতে শুরু করি। আর এখন এটি নিশ্চিতভাবে বোঝা গেছে যে, লাইকোপিনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্ষমতা বিটা কেরোটিনের চেয়ে দ্বিগুণ। আর ক্যান্সার প্রতিরোধে বিটা ক্যারোটিনের চেয়ে লাইকোপিন ১০ গুণ কার্যকর।
এখানে কিছু বিশেষ ক্যান্সারের সাথে লাইকোপিনের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হলোÑ
প্রোস্টেট ক্যান্সার
যারা নিয়মিত লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার উল্লেখযোগ্য হারে কম। এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিন প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি ২১%-৬০% কমায়। বেশি পরিমাণে লাইকোপিন খেলে পিএসের পরিমাণ কমে।
পাকস্থলীর ক্যান্সার
পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে লাইকোপিনের ভূমিকা বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে। যারা লাইকোপিন কম খাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে একই সামাজিক ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যে অন্যদের তুলনায় পাকস্থলীর ক্যান্সার বেশি হয়। এমনকি যারা বেশি লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাদ্য খান তাদের ক্ষেত্রে খাদ্যনালীর অন্যান্য অংশের ক্যান্সারও কম হয়।
ফুসফুসের ক্যান্সার
ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে লাইকোপিনের ভূমিকা বহুল বিবেচিত। এমনকি যেসব ধূমপায়ী লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খান তাদের ক্ষেত্রেও ফুসফুসের ক্যান্সার উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার
মহিলাদের স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু সারভাইক্যাল ক্যান্সারের সাথে লাইকোপিনের নিবিড় যোগাযোগ দেখা গেছে। যেসব মহিলা লাইকোপিনের ঘাটতিতে ভোগেন তারা স্তন ও জরায়ু ক্যান্সারের সহজ শিকারে পরিণত হন।
লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাদ্য
আঙুর, পেয়ারা, পেয়ারার রস, পেঁপে, টমেটো, টমেটো কেচাপ, টমেটো রস, তরমুজ। টমেটো বাদে অন্যান্য খাদ্য তাজা খেলেই বেশি লাইকোপিন পাওয়া যাবে। টমেটো রান্না বা সস বানালে বেশি পরিমাণে লাইকোপিন থাকে এবং দেহ তা সহজেই আত্তীকরণ করতে পারে। উল্লিখিত খাবারগুলোর মধ্যে টমেটোতেই সবচেয়ে বেশি লাইকোপিন পাওয়া যায়।
সব বয়সের মানুষের কম করে একটি লাইকোপিনসমৃদ্ধ খাদ্য, ফল প্রতিদিন খাওয়া উচিত।