কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন টনকী ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামে ২০ দিনের কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করলো মা
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন টনকী ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামে ২০ দিনের কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করলো মা
শনিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুমিল্লা সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া আক্তারের আদালতে ওই স্বীকারোক্তি দেন তিনি। মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন টনকী ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নিহত শিশুর দাদা বাচ্চু মিয়া বলেন, বড় ছেলে মুজিবুর রহমান ও মেজো ছেলে সজিবুর রহমান প্রবাসে থাকে। সেখানে বড় ছেলে ঠিকমতো বেতন পায় না। মেজো ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়ে বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। অস্বচ্ছল সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে আমি এখনো মাঠে কাজ করি। অন্য দিনের মতো গত বৃহস্পতিবারে (১৩ আগস্ট) জমিতে কাজ করতে যাই। বাড়িতে এসে শুনি ২০ দিনের নাতনি রাবেয়া বসরীকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে থানায় গিয়েও সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল। পরদিন শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে খালের পানিতে আমার নাতনির লাশ ভেসে ওঠে। এ খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে আসেন এবং লাশের সাথে আমাদের সকলকে থানায় নিয়ে যায়। সকলের সাথে এ বিষয়ে আলাপ শেষে আমাদেরকে ছেড়ে দিলেও আমার পুত্রবধূ রাহিমা আক্তার রত্মার (মুজিবুর রহমানের স্ত্রী) সন্দেহজনক কথাবার্তার কারণে তাকে থানায় রেখে দেয় পুলিশ। শনিবার সকালে শুনতে পারলাম, সে নাকি স্বীকার করেছে যে, সে (রত্না) নিজেই শিশু রাবেয়াকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে। তবে, গত এক সপ্তাহ যাবত রত্না একা একা বসে থাকতো। আমাদের সাথে তেমন বেশী কথা বলতো না। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করলেও কোনো উত্তর দিত না। মানসিক চাপে ও প্রথম সন্তান কন্যাশিশু হওয়ায় সে নাকি তার মেয়েকে হত্যা করেছে।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার শিশুটি না পাওয়ার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ওই বাড়িতে যাই। শুরুতেই শিশুটির মা রত্না একেক সময় একেক কথা বলছেন। তার মানসিক অস্থিরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। পরে সে স্বীকার করেছে, নানান টেনশনে পড়ে ও কন্যাশিশু জন্ম হওয়ায় জিদ করে কন্যাকে পানিতে ফেলে দিয়েছে। সে আদালতেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় শিশুর দাদা বাচ্চু মিয়া মামলার বাদি হয়েছেন। শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকালে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।