কুমিল্লায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট এবং মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ৩ এসআইসহ ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কুমিল্লায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট এবং মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ৩ এসআইসহ ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা: কুমিল্লায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট এবং মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ৩ এসআইসহ ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে এই মামলা করেন। মামলা আমলে নিয়ে বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২৯শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লার জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। আসামিরা হলেন- কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই (নিরস্ত্র) (৩৫) সাইফুল ইসলাম, এএসআই কৃষ্ণ সরকার (৩৫), এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার (৩২), এসআই কামাল হোসেন (৩৫), এএসআই মতিউর রহমান (৩৮) এবং পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান (৩০) ও জামাল হোসেন (৩৫)। এই মামলায় আরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওপ্পেলা রাজু নাহা জানান, সালমা আক্তারের ভাই ৯ মামলার আসামি লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
এখন উল্টো তারাই বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। সঠিক বিষয়টি তদন্তে বের হয়ে আসবে। মামলার বাদী সালমা আক্তার জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য তার বাড়িতে আসেন। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ সদস্য হিসেবে দাবি করলে ভাই ও ছেলে পুলিশ সদস্য হওয়ায় সেই সুবাদে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করতে দেন। ঘরে প্রবেশ করেই পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম, কৃষ্ণ সরকার, নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন বিভিন্ন রুম তল্লাশি শুরু করেন। কোনো মামলায় ওয়ারেন্টের আদেশ আছে কিনা জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার গালমন্দ করে লাঠি দিয়ে সোকেসের গ্লাস ভেঙে ফেলে। আলমারির চাবি নিয়ে তল্লাশির নামে ড্রয়ারে থাকা নগদ ২ লাখ টাকা এবং ২ জোড়া কানের দুল, ২টি চেইন ও ৩টি আংটিসহ ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় চিৎকার করলে পাশের বাড়িতে থাকা বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও সালমা আক্তারের স্বামী আবুল কালাম আজাদ এগিয়ে পার্শ্ববর্তী বিল্লাল খানের দোকানের সামনে আসেন। তখন পুলিশ সদস্যরা আবুল কালাম আজাদকে দোকানের সামনে থেকে টেনে-হিঁচড়ে আটকের চেষ্টা করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের আপত্তি জানালে এএসআই কৃষ্ণ সরকার তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। অভিযোগের বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি ওপ্পেলা রাজু নাহা জানান, সালমা আক্তারের ভাই লোকমান হোসেন ডাকাতিসহ ৯টি মামলার আসামি। পলাতক থাকায় পুলিশ সাদা পোশাকে লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তারের জন্য সালমা আক্তারের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ওই সময় সালমা আক্তার, তার স্বামী আবুল কালাম আজাদসহ স্থানীয় কিছু ব্যক্তি পুলিশের উপর চড়াও হয়। তখন পুলিশ সদস্যরা তার স্বামী আবুল কালাম আজাদকে আটক করে। এমনকি পরবর্তীতে কুমিল্লা থেকে অভিযান চালিয়ে ৯ মামলার আসামি লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে আদালত অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। অভিযোগটি আমরা তদন্ত করে দেখবো।