কুইক রেন্টাল থেকে সরে আসছে সরকার
ঢাকা: কুইক রেন্টালসহ তেলভিত্তিক স্বল্পমেয়াদী বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে আসছে সরকার। আগামী বাজেটে বড় আকারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অর্থ বরাদ্দের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীও জানালেন, এরইমধ্যে স্বল্পমেয়াদী প্রকল্পগুলো থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর সময় টেলিভিশনের।
২০০৮ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় বিদ্যুতের চাহিদা ও এর বিপরীতে উৎপাদন ক্ষমতা ছিল পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। সেসময় বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধানে কুইক রেন্টালসহ তেলভিত্তিক স্বল্প মেয়াদী প্রকল্প বেছে নেয় সরকার। পাঁচ বছরের মাথায় বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু এগুলো তেলভিত্তিক হওয়ায় বিদ্যুতের দাম কয়েক দফা বাড়িয়েও ভর্তুকি কমানো যায়নি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর মাধ্যমে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও স্বয়ং সম্পূর্ণতা আসেনি। আর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনীতিতে এর নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, ‘কুইক রেন্টাল না থাকলে বিদ্যুতের সরবরাহ কম হতো এবং যারা বিদ্যুৎ পাচ্ছে, তাদের অনেকেই বিদ্যুৎ পেতো না, দুটি কারণে এটি দীর্ঘমেয়াদে চলতে পারবে না, দাম বেশি হলে সরকার ভর্তুকি দেবে, আর এর প্রভাবে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যাবে, এত করে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’।
পাশাপাশি জ্বালানি খাতে সরকারের ব্যয় বাড়লেও এর মাধ্যমে কোনো স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘যদি আমরা দেখতাম নতুন নতুন দক্ষ জনশক্তি তৈরি হচ্ছে, প্রযুক্তি কেনা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের গ্যাস, তেল, কয়লা এগুলো নিয়ে কাজ করার মতো একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি হয়েছে তবে এই ব্যয় বৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল থাকতো, বিদ্যুতের দাম বাড়তে হতো না এবং রাষ্ট্রও ঋণগ্রস্ত হতো না’।
এ বিষয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলছেন, আগামী বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি অপরিবর্তিত থাকবে। তবে স্বল্পমেয়াদী প্রকল্পগুলো থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্পগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘কুইক রেন্টাল নিয়ে সমালোচনা হয়েছে কিন্তু সেই সময়ে আর কোনো উপায় ছিল না, আমরা কুইক রেন্টাল থেকে ইতিমধ্যেই সরে আসা শুরু করেছি এবং আমাদের যেই বড় বড় প্রকল্পগুলো পাইপলাইনে ছিলো সেগুলো বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে’।
তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিক জ্বালানির যোগান কি হবে, সে বিষয়েও সরকারকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।