কারাগারে পড়াশোনা করেই গোল্ডেন জিপিএ-৫
কারাগারে পড়াশোনা করেই গোল্ডেন জিপিএ-৫
দাখিল পাশের পর মাদ্রাসায় ক্লাস করেছেন মাত্র এক সপ্তাহ। এরপর গ্রেপ্তার হয়ে স্থান হয় চার দেয়ালের কারাগারের আবদ্ধ কক্ষে। সেখানেই পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। কারাগারে বসবাস করে প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও একাগ্রতা নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। দীর্ঘ ২১ মাস ২৬দিন কারাবাসকালে ২০১৫ সালের আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চমক দেখিয়েছেন মিরসরাইয়ের করেরহাট গনিয়াতুল আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান। এবারের আলিম পরীক্ষার ফলাফলে সে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর একটি রাজনৈতিক মামলায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার নামে আরো দুটি মামলা দেয়া হয়। দীর্ঘ ২১ মাস ২৬দিন কারাবাসের পর গত ২৮ জুলাই জামিনে মুক্তি পায় মাহমুদুল হাসান।
মাহমুদুল হাসান বলেন, এমন ফলাফলে আমি খুবই আনন্দিত। আমার পরিবার পরীক্ষার পূর্বে জামিনের জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাই কারাগারে বসে সংকল্প করেছিলাম যদি পরীক্ষার সুযোগ পাই তাহলে আমাকে ভালো ফলাফল করতে হবে। কারা প্রশাসনের সহযোগীতায় ভিতরে বই নিয়ে পড়াশোনা করেছি। কারাগারে সাথে থাকা অনেক ভাই পড়াশোনার জন্য উৎসাহিত করেছেন। আমি এমন ফলাফলের জন্য আল্লাহ‘র কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। হাসান দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৪ (৪.৬৩) পেয়েছিলো।
করেরহাট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এবার আমার প্রতিষ্ঠান থেকে ২৯ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাশ করেছে। তার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাহমুদুল হাসান। কারাগারে পরীক্ষা দিয়ে সে এমন ফলাফল অর্জন করেছে। কারাগারে পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে তাকে সহযোগীতা করা হয়। তার এমন ফলাফলে মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী সকলে আনন্দিত।
মাহমুদুল হাসানের পিতা শিহাব উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের এমন ফলাফলে কেমন খুশি হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা। দীর্ঘ ২১ মাস ২৬ দিন আমার ছেলে কারাগারে পড়াশোনা করে এমন ভালো ফলাফল অর্জন করে। তার পরীক্ষার পূর্বে একাধিকবার জামিন চাইলেও আদালত জামিন দেয়নি। ভবিষ্যতে যেন আলো ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারেন এ জন্য সকালের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
মাহমুদুল হাসান উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের ভালুকিয়া গ্রামের চাকুরীজীবি শিহাব উদ্দিন ও গৃহিনী লুলু আল মারজানের ছেলে। ২ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে হাসান সবার বড়।