কাবুল থেকে দূতাবাস কর্মীদের দেশে ফেরার নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের

29/04/2021 12:02 pmViews: 6

 আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় সেখানে মার্কিন সেনাদের জন্য হুমকি বেড়ে যাচ্ছে। সে কারণে অতিরিক্ত দূতাবাস কর্মীদের অবিলম্বে কাবুল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণার দুই সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র নতুন এই ঘোষণা দিল। দেশটিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই হাজার সেনা অবস্থান করছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এক ঘোষণায় জানিয়েছে, আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা তাদের সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেবে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের এই প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে। তবে ওইদিন শুধু মার্কিন বাহিনীই নয়, আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিতে শুরু করবে ন্যাটো সেনারাও।

কিছুদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করেন যে, এ বছর নাইন ইলেভেনের হামলার ২০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে আফগানিস্তান থেকে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। এর মাধ্যমে দেশটিতে বিশ বছর ধরে থাকা মার্কিন সেনা উপস্থিতির অবসান হতে যাচ্ছে।

আফগানিস্তানে ওয়াশিংটনের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ মার্কিন সিনেটের এক শুনানিতে সতর্ক করে বলেছেন, তালেবান অধ্যুষিত সরকার যদি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান না দেখায় তবে মার্কিন সহায়তা হ্রাস পাবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা কাবুল মার্কিন দূতাবাস থেকে মার্কিন সরকারের কর্মী যারা অন্যক্ষেত্রেও কাজ করতে পারবেন তাদের কাবুল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কাবুলের ভারপ্রাপ্ত মার্কিন দূত রোজ উইলসন জানিয়েছেন, সম্প্রতিক কাবুলে সহিংসতা এবং আতঙ্কের ঘটনা বাড়তে থাকায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি মঙ্গলবার বলেন, কাবুলে একটি কার্যকরী দূতাবাস রাখার ব্যাপারে প্রশাসন এখনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানে অবস্থিত দূতাবাসের কার্যক্রম এগিয়ে নেয়াই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু এখানে আমাদের খুবই সামান্য সংখ্যক সামরিক উপস্থিতি থাকবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পর সম্প্রতি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে জার্মানিও। আগামী জুলাইয়ের প্রথম দিক থেকেই তারা তাদের সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে।

সম্প্রতি জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের চিন্তা হচ্ছে সেনা প্রত্যাহারের সময়কাল কমিয়ে আনা। আগামী ৪ জুলাই থেকে এই প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ন্যাটোর পক্ষ থেকে নেয়া হবে বলেও জোর দেন তিনি।

ন্যাটোর ৯ হাজার ৬শ সদস্যের শক্তিশালী প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা মিশন রয়েছে আফগানিস্তানে। এর মধ্যে মার্কিন সেনাবাহিনী অন্তর্ভূক্ত এবং ন্যাটো ওয়াশিংটনের সামরিক শক্তির ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। ন্যাটোতে বর্তমানে ৩৬টি সদস্য ও অংশীদারী দেশের সদস্যরা রয়েছে। ১ হাজার ১শ সেনা নিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম সৈন্য দল রয়েছে জার্মানির।

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছিল, তালেবান যদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট আফগানিস্তান থেকে পরবর্তী ১৪ মাসের (২০২১ সালের মে) মধ্যে সকল সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। কিন্তু তালেবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থার পরেও সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন দেশ।

Leave a Reply