কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস-ইসরাইল ‘শান্তিচুক্তি’
কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস-ইসরাইল ‘শান্তিচুক্তি’
আপাতত দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো রকম আক্রমণ চালাবে না। কাতারের মধ্যস্থতায় এমনই চুক্তি হলো ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের হামাসের মধ্যে। করোনাকালে সাময়িক সময়ের জন্য গাজা উপত্যকার সঙ্গে ইসরাইলী সেনার সংঘর্ষ কিছুটা কমলেও গত ৬ আগস্ট থেকে ফের তা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কাতারের মধ্যস্থতায় আপাতত তার অবসান হলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৬ আগস্ট গাজা ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে ইসরাইল। ইসরাইলের সেনাবাহিনী দাবি করে, গাজায় হামাসের ক্যাম্প লক্ষ্য করে রকেট ছোড়া হয়েছিল। ইসরাইলের দাবি, দক্ষিণ ইসরাইলে বিস্ফোরক-বেলুন পাঠিয়েছিল হামাস। এর পর প্রায় প্রতিদিনই হামাস এবং ইসরাইলী সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুই পক্ষই সীমান্তের দুই পারে রকেট ছুড়েছে। আক্রমণের পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় অর্থনৈতিক অবরোধ আরো জোরদার করে ইসরাইল। গাজার অধিবাসীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সীমান্ত দিয়ে খাবার এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী ঢোকাও বন্ধ করে দেয়া হয়।
এমনিতেই গাজা ভূখণ্ডে অবরোধ তৈরি করে রেখেছে ইসরাইল এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিসর। ২০০৭ সালে গাজা ভূখণ্ডে হামাস ক্ষমতা দখল করার পরেই মিসর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে জীবনযাপনের মতো সামান্য রসদ গাজায় যেতে দেয়া হয়। গত কয়েক দিনে ইসরাইল সম্পূর্ণ অবরোধ তৈরি করেছিল বলে হামাসের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে কাতার। তেল আভিভে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়।
বৈঠকের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইসরাইল সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। কিন্তু হামাস জানিয়েছে, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো পক্ষই একে অপরকে আক্রমণ করবে না। ইসরাইল অবরোধ তুলবে। সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারবেন গাজার মানুষরা। ফিলিস্তিনের একমাত্র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখার জন্য জ্বালানি প্রয়োজন। জ্বালানির সরবারোহে বাধা দেবে না ইসরাইল। খাবার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও আটকানো হবে না।
মধ্যস্থতাকারীদের বক্তব্য, বৈঠকে ইসরাইল দাবি করেছে, দক্ষিণ ইসরাইলে বিস্ফোরক বেলুন পাঠাতে পারবে না হামাস। রকেটও ছুড়তে পারবে না। হামাস ইসরাইলের বক্তব্য মেনে নিয়েছে বলেই মধ্যস্থতাকারীদের দাবি।
গাজা ভূখণ্ড নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। হামাসের সঙ্গে ইসরাইলী সৈন্যদের লড়াইও নতুন কোনো ঘটনা নয়। ইসরাইল যেভাবে গাজা ভূখণ্ডে অবরোধ তৈরি করেছে, যেভাবে সেখানে আক্রমণ চালানো হয়, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বহু সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। তারই মধ্যে করোনা নতুন সমস্যা তৈরি করেছে। গাজায় করোনা ধরা পড়েছে। হামাস গাজায় সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে। এই অবস্থায় আপাতত শান্তিচুক্তি প্রয়োজন ছিল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সূত্র : ডয়চে ভেলে