কাজের সময় বেঁধে ক্যালেন্ডার মমতার

03/01/2014 9:12 amViews: 3

আগামী এক বছরে কী কী কাজ করা হবে, সেটা আগাম জানিয়ে দিতে প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই উপলক্ষে এই প্রথম রাজ্যের সচিবালয়ে পা রাখলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। ক্যালেন্ডার প্রকাশের পর জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই সরকার গত দু’বছর ধরে প্রশাসনে যে নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে, যে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তা এ রাজ্য গত ৪০ বছর দেখেনি।

কাজে গতি আনা এবং সময়মতো তা শেষ করার ব্যাপারে এর আগে একাধিক বার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় জেলায় সফরে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকের সময়ে দফতর ধরে ধরে নিজেই কাজের খতিয়ান শুনিয়েছেন। জানতে চেয়েছেন, কাজ আটকে থাকার কারণ। প্রয়োজনে ধমকও দিয়েছেন দফতরের মাথাদের। এমনকী, কলকাতায় টাউন হলে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকেও দফতর ধরে ধরে কে কতটা কাজ করেছে, কত টাকা খরচ করেছে, দিয়েছেন সেই খতিয়ান।

কিন্তু গোটা বিষয়টিকে তিনি যে আর প্রশাসনের অন্দরে আটকে রাখতে চান না, তা দু’টি কাজে বুঝিয়ে দিলেন মমতা। প্রথমত, সময় বেঁধে কাজ শেষ করার জন্য পরিষেবা আইন পাশ করেছে তাঁর সরকার। সময়মতো কাজ না-পেলে যে আইন মোতাবেক সরকারি কর্মচারীদের শাস্তি দাবি করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এ বার প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার সরকারি কর্মীদের দায়বদ্ধ করার দ্বিতীয় ধাপ বলেই মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কর্তাদের অনেকেই। গোটা বছরে সরকার কী কী কাজ করবে, তা আগাম জানিয়ে দেওয়ার ফলে বছর শেষে জনগণ সেই ক্যালেন্ডার ধরে সরকারি কর্মীদের কৈফিয়ৎ চাইতে পারবে।

এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার মতে, কাজে গতি আনার জন্য আর মৌখিক আশ্বাস নয়, অফিসারদের কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে ব্যবস্থা দেশের আর কোথাও নেই বলে ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন মমতা। এ দিন প্রশাসনিক ক্যালেন্ডারের উদ্বোধন করে সে কথা বলেছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও। তার কথায়, ৬০ বছর ধরে বহু নেতা থেকে আমলা, আম-জনতা থেকে বহু বিখ্যাত মানুষ, দল-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে অনেকের সঙ্গে মিশেছি। কিন্তু বলতে বাধা নেই, এমন অভিনব এবং স্বচ্ছ পদক্ষেপ আগে কখনও দেখিনি।

রাজ্যপালের প্রশংসায় এ দিন দৃশ্যতই খুশি মমতা এর পরে সুশাসনের তিনটি মন্ত্র উল্লেখ করে নিজের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছেন। বলেছেন, আমার বিচারে সুশাসনের তিনটে মন্ত্র। ইন্টেনশন-মিশন-অ্যাকশন। কোনও সরকারের যদি উদ্দেশ্য ঠিক থাকে, সেই উদ্দেশ্যকে লালন করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যও অবিচল থাকে, সেই ভাবে যদি কাজও করা হয়, তা হলে সুশাসন আসবেই।

 

Leave a Reply