কলকাতার বিদায়, ফাইনালের লড়াইয়ে মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদ
বেশ ভালই চলছিল বাংলাদেশের দুই তারকা সাকিব-মুস্তাফিজের লড়াই। অবশেষে এলিমিনেটর ম্যাচে সাকিব বিহীন কলকাতাকে হারিয়ে লড়াইয়ের ইতি টানলো মুস্তাফিজের সানরাইজার্স। দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ২২ রানে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন জীবন্ন রেখেছে হায়দ্রাবাদ।
প্রাথমিক পর্বে মুখোমুখি হয়ে কলকাতার কাছে দুইবারই হেরেছিল হায়দ্রাবাদ। কিন্তু প্রয়োজনীয় মূহুর্তে শেষ হাসি হাসল মুস্তাফিজরা। কলকাতার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেছে, এবার নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে আইপিএল।
বুধবার ফিরোজ শাহ কোটলার উইকেটে ছিল সবুজের আভা। আর হায়দ্রাবাদের টপ অর্ডারে বাঁহাতিদের প্রাধান্য। সব মিলিয়েই হয়ত একাদশে জায়গা হয়নি সাকিবের। কিন্তু উইকেটের চেহারা ছিল কেবলই বিভ্রান্তি। বল গ্রিপ করেছে, টার্নও করেছে বেশ। কলকাতা অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর হয়তো মাঠে নেমে ঠিকই অভাব বোধ করেছেন সাকিবর মত একজনের।
৪ ওভারে মুস্তাফিজ দিয়েছেন ২৮ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে নিজের প্রথম ওভার করে দিয়েছিলেন ৩ রান। পরের ওভারে ১১। শেষ দুই ওভারে দিয়েছেন ১৪ রান। স্লগ ওভারে কাটার ও ইয়র্কারের মিশেলে মুস্তাফিজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং ডানা মেলতে দেয়নি কলকাতার ব্যাটসম্যানদের।
গুরুত্বপূর্ণ সময় একটা ক্যাচ অবশ্য ছেড়েছিলেন মুস্তাফিজ। বারিন্দর স্রানের বলে থার্ডম্যানে ছাড়েন সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ, মুস্তাফিজের হাতে লেগে যেটি হয়ে যায় ছক্কা। তবে সেটির বড় খেসারত দিতে হয়নি হায়দ্রাবাদকে। পরের ওভারেই ময়জেস হেনরিকেস আউট করে দেন সূর্যকুমারকে।
এই সূর্যকুমার ও মনিশ পান্ডে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন কলকাতার আশা। ১৬৩ রান তাড়ায় ৬৯ রানে কলকাতা হারায় ৪ উইকেট। পঞ্চম উইকেটে ৫ ওভারে ৪৬ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। ১৫ বলে ২৩ করে আউট হয়েছেন সূর্যকুমার।
মুস্তাফিজকে বেশ ভালো খেলছিলেন পান্ডে, তার ৭ বলে নিয়েছেন ১২ রান। কিন্তু ভুবনেশ্বরের ফুল টসে পান্ডে ক্যাচ হয়ে ফিরলে (২৮ বলে ৩৬) শেষ হয়ে যায় কলকাতার শেষ আশাটুকুও। হায়দ্রাবাদের ভুবনেশ্বর নিয়েছেন ৩ উইকেট, হেনরিকেস দুটি।
হেনরিকেস এর আগে ব্যাট হাতেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সাকিবের বদলে একাদশে জায়গা পাওয়া মর্নে মর্কেল ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড করেন শিখর ধাওয়ানকে। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নার ও হেনরিকেস গড়েন ৫৯ রানের জুটি। এই জুটি যখন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, পর পর দুই বলে দুজনকেই ফেরান চায়নাম্যান বোলার কুলদিপ যাদব। ২১ বলে ৩১ করেছেন হেনরিকেস, ২৮ বলে ২৮ ওয়ার্নার।
পরে ২ ছক্কায় ১৩ বলে ২১ রান করা দিপক হুদাকে কুলদীপ ফেরান সরাসরি থ্রোতে রান আউটে। হঠাৎ থমকে যাওয়া হায়দ্রাবাদের ইনিংসটাকে টেনে নেন যুবরাজ সিং। নিলামে ৭ কোটি রুপিতে কেনা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান চোটের কারণে খেলতে পারেননি টুর্নামেন্টের প্রথম ভাগে। তবে জ্বলে উঠলেন দলের প্রয়োজনের সময়। ৩০ বলে করেছেন ৪৪ রান, এবারের মৌসুমে ৮ ম্যাচে যেটি তার সর্বোচ্চ। মর্কেলের করা শেষ ওভারে বিপুল শর্মার দুটি ছক্কায় হায়দ্রাবাদ পেরিয়ে যায় ১৬০। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে শেষ দিকে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে শেষের ওই দুই ছক্কা।
ম্যাচ সেরা হয়ে হেনরিকেস উদযাপন করলেন অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলে ফেরা।
শুক্রবার একই মাঠেই গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে মুস্তাফিজরা নামবেন ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে। যেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিডি নিউজ।