‘এ বিজয় বাংলা চলচ্চিত্রের স্বপক্ষে লোকগুলোর’
‘এ বিজয় বাংলা চলচ্চিত্রের স্বপক্ষে লোকগুলোর’
গত ৫ই মে অনুষ্ঠিত হলো শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। এর আগে থেকেই মিশা সওদাগর বিভিন্ন ছবির শুটিং বন্ধ করে প্রচারণায় অংশ নেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মিশা সওদাগর। এবারের নির্বাচনে মোট ৫৫৮ ভোটের মধ্যে মিশা সওদাগর পান ২৫৯ ভোট, তার নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ওমর সানী পান ১৫৩ এবং ড্যানি সিডাক পান ৪৪ ভোট। নির্বাচনে জয়ী হবার পর নব নির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর মানবজমিনকে বলেন, বিজয়টি আমার একার না, এ বিজয় বাংলা চলচ্চিত্রের স্বপক্ষে লোকগুলোর। এর আগেও একাধিকবার এই সমিতিতে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি। এটি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। তাই রাজনৈতিক সংগঠনের মতো ১০০ দিনের কোনো ভিশন এখানে প্রযোজ্য নয়। তারপরও আগামী ১০০ দিনের মধ্যে কিছু কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই। কি ধরনের কাজ বাস্তবায়ন করবেন বা কি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন জানতে চাইলেন তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতির বন্যায় শিল্পীদের ভাসাতে চাই না। আমার প্রথম কাজই হবে দেশবরেণ্য শিল্পীদের নিয়ে একটি উপদেষ্টামন্ডলী গঠন করা। এতে থাকবেন নায়ক রাজ রাজ্জাক, আলমগীর, সোহেল রানা, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চন, কবরী, ববিতাসহ অনেকে। তাদের দেওয়া পরামর্শে আমরা কাজ করব। এবারের নির্বাচনে মিশা ও জায়েদ প্যানেলের স্লোগান ছিল ‘নীতিগতভাবে আমরা এক’। মিশা জানান, এই স্লোগান যে শুধু আমাদের প্যানেলের ২১টি পদপ্রার্থীর তা নয়। চলচ্চিত্রের সব শিল্পীই এই স্লোগানে সমর্থন দিয়েছেন। আর বিপুল ভোটে আমরা জয়ী হয়েছি। বিজয়ী ও পরাজিতসহ সমিতির সব সদস্যশিল্পীকে নিয়ে বৈঠক করব আমরা। একটা আদর্শ ও উদ্দেশ্য সামনে রেখে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। আমরা চাই প্রত্যেক শিল্পী কাজের মধ্যে থাকুক। নির্দিষ্ট কিছু শিল্পীদের নিয়ে কাজ করার রীতি বন্ধ করতে হবে। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছি, চলচ্চিত্রে আমরা যারা কাজ করি তারা একটি পরিবার। তাই আশা করা যায় সবাইকে এক ছাদের নিচে আনা সম্ভব। শিল্পীদের চাওয়া খুব কম। ওই ছোট্ট চাওয়াটাই আমরা পূরণ করতে চাই। তাদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে নব নির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, এখানে কে জয়ী আর কে পরাজিত এটা কোনো ঘটনা নয়। আমরা মিলেমিশে কাজ করতে চাই। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা শিল্পীদের মঙ্গল হবে এমন কাজই করতে চাই। নতুন কোনো পরিকল্পনা যদি কারো থাকে তবে সেটা অবশ্যই আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে পারবেন। যদি ভালো পরিকল্পনা হয় অবশ্যই আমরা সেটা অবশ্যই গ্রহণ করব। যারা পরাজিত হয়েছেন তারাও আমাদের পরিবারের অংশ। আলাদা মনে করব না আমি। সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই আমি। এ ছাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্ণধারদের সঙ্গে বসে তাদের আবারো ছবি নির্মাণে উৎসাহিত করতে চাই। বাংলা চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য প্রযোজক-পরিবেশক, পরিচালক সমিতি, ক্যামেরা অ্যাসোসিয়েশনসহ সব সংগঠন থেকে দরকার হলে উপদেষ্টা পরিষদে যোগ্য লোক থাকবে। তাদের নিয়ে ভালো কিছু কাজ করতে চাই আমরা। কবে থেকে আবারও কাজে ফিরবেন জানতে চাইলে মিশা সওদাগর বলেন. কেউ নির্বাচন নিয়ে আপীল না করলে দুই-তিনদিন পরই শপথ গ্রহণ হবে। শপথ গ্রহণ শেষ হলে ১০ই মে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নজাল’ ছবির ডাবিং দিয়ে কাজ শুরু করব। এই কয়েকদিন অনেক পরিশ্রম করেছি। যে কোনো কাজে একটা প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়। এবারের নির্বাচনে অনেক আগে থেকেই আমরা সময় দিয়েছি। সব শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও আমাদের যথেষ্ট সময় দিয়ে নির্বাচনে ভোট প্রদান করে জয়লাভ করেছেন। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছি আমি। এবার শিল্পীদের জন্য কাজ করার পালা আমাদের।