এ আঘাত গণতন্ত্রের ওপর: মির্জা ফখরুল

19/06/2017 2:47 pmViews: 8

এ আঘাত গণতন্ত্রের ওপর: মির্জা ফখরুল

রাঙামাটি যাওয়ার পথে গাড়ি বহরে হামলার ঘটনাকে ‌গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। আমাদের পর্যায়ে যদি এই আক্রমণ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, সেটা আপনারা (সাংবাদিক) বুঝে নিন।

রোবাবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাঙ্গুনিয়ায় ওই হামলার পর রাঙামাটি যেতে না পেরে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল তার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনার বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, এ আঘাত গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। যারা মুক্ত চিন্তার কথা বলে, এ সরকারের খারাপ কাজগুলোর বিরোধিতা করে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার- তাদের প্রতি এ আঘাত। যারা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন- এ আঘাত তাদের প্রতি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র আবার উদঘাটিত হয়েছে। সবসময় মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে এলেও তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ভিন্নমতেও তারা বিশ্বাস করে না। সহনশীলতা বলতে তাদের মধ্যে কিছু নেই। আমরা তো সেখানে কোনো জনসভা করতে যাইনি। আমাদের পার্টির মিটিংও করতে যাইনি। যারা নিহত হয়েছেন সেসব পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে যাচ্ছিলাম।

এই হামলা ‘অবিশ্বাস্য’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের অবস্থা যদি এই হয়, সাধারণ মানুষের অবস্থা কী? আমি মনে করি, এ আক্রমণ গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ। সুস্থ চিন্তার মানুষের প্রতি আক্রমণ।

জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ‘এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে’ পরাজিত করতে পারলেই এর প্রতিবাদ হবে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একদিকে দেশ ও জাতির সমস্ত রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্গত মানুষের পাশেও আমরা দাঁড়াতে পারব না। আপনি এখন ত্রাণও দিতে পারবেন না।

তিনি বলেন, একটি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সেক্রেটারি জেনারেলের ওপর এ আক্রমণ। এরপর আর বাকি থাকল কি? এরপর কি আর কোনো রাজনীতি থাকে? এরপর তারা কি চায়?

এক জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পাহাড়ে এত প্রাণহানির পর সরকারের উচিত ছিল রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা। জনগণের প্রতি তাদের কোনো মায়া-মমতা-দরদ নেই।

পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পরে পৌঁছে দেয়া হবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চেয়ারপার্সনের নির্দেশে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল রাঙামাটির উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসি।

তিনি বলেন, বিমানবন্দর থেকে আমরা রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা হই। পথিমধ্যে জানতে পারি সড়কে যে অংশ ভাঙন আছে, সেখান দিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই কাপ্তাই গিয়ে সেখান থেকে নদী পথে রাঙামাটি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়া থানা অতিক্রম করে ইছাখালী বাজারে পৌঁছায়। সেখানে তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় ৩০-৪০ জন যুবক লাঠি, হকিস্টিক ও পাথর নিয়ে হামলা চালায়। গাড়ির সামনের কাঁচ একটি বড় পাথর দিয়ে ভেঙে ফেলে। তারপর হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করতে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) রহুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুরের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শওকত আলী নূর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন, উত্তরজেলা যুবদল নেতা মুরাদ চৌধুরী প্রমুখ।

Leave a Reply