এলাকায় শান্তি নিশ্চিত করেছিল বলেই লিটনকে জীবন দিতে হল, সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল তাণ্ডব ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকেও তার এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি। এটাই ছিল এমপি লিটনের বড় অপরাধ। অগ্নিসন্ত্রাস রুখে দিয়ে এলাকার মানুষের শান্তি ও স্বস্তি নিশ্চিত করেছিল বলেই হয়তো তাকে এভাবে অকালে জীবন দিতে হলো। আমরা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেভাবে কঠোর অবস্থা নিয়েছি, তেমনিভাবে অবশ্যই লিটন হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। খুনিরা কেউই রেহাই পাবে না।
গতকাল রবিবার দশম জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনের সূচনা দিনে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, গোটা বিশ্বে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি-তখনই যেন প্রতিশোধ নিতেই এসব কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। এটাই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের নমুনা। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শিশু সৌরভ গুলিবিদ্ধ হওয়া নিয়ে ওই সময় কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য লিটন কেন একটি শিশুকে গুলি করবে? শিশু সৌরভের পরিবারও তো আওয়ামী লীগ করত। লিটনকে হত্যার জন্য ওই সময় এ্যামবুশ করে বসেছিল। এটা দেখে লিটন নিজের জীবন বাঁচাতেই ফাঁকা গুলি করে। এটা নিয়ে কিছু পত্র-পত্রিকা এমনভাবে লিখল, কিন্তু কেউ সত্য ঘটনাটি লিখল না। তিনি বলেন, আমার কষ্ট হয় এজন্য তার অস্ত্রটাও সিজ করা হলো। সে বারবার বলছিল যেখানেই যাই সেখানেই নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হয়। নইলে আমাকে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু তার, স্ত্রীসহ সবার অস্ত্র সিজ করা হলো। নির্বাচনের কথা বলে পুলিশের নিরাপত্তাও তুলে নেয়া হলো। এই সুযোগেই হত্যাকারীরা বাড়িতে ঢুকে নির্মমভাবে লিটনকে হত্যা করে।
শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্র তোফায়েল আহমেদ, প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জুনাইদ আহমেদ পলক, হুইপ মাহাবুব আরা গিনি, এ কে এম শামীম ওসমান, মীর শওকত আলী বাদশা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমুখ অংশ নেন।
এদিকে এ অধিবেশন আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত চালনোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল সংসদ কার্য উপদেষ্টা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।