এম কে রহমানের অব্যাহতি: নেপথ্যে র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেফতারাদেশ?

20/05/2014 7:22 amViews: 6

এম কে রহমানের অব্যাহতি: নেপথ্যে র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেফতারাদেশ?
ঢাকা : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত  এটর্নি জেনারেল এম কে রহমানকে (মুহাম্মদ খলিলুর রহমান) অব্যাহতি  দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সোমবার রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আইন মন্ত্রণালয় এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেন বা পদচ্যুত করেন।

তবে এই পদচ্যুতির নেপথ্যে র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে হাইকোর্টের নির্দেশ ঠেকাতে আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থতাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আমলে নিয়ে র‌্যাবের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। কর্মকর্তারা সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং এদের একজন সরকারের প্রভাশালী মন্ত্রী পরিবারের আত্মীয় হওয়ায় তাদের  গ্রেফতারে জটিলতা দেখা দেয়।

অপরদিকে সন্দেহজনক আসামি হলেও তাদেরকে গ্রেফতারে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকায় গ্রেফতার না করেও বেকাদায় পড়ে সরকার। ওই কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে সরকারের গড়িমসি গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। এতে ব্যাপকভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশেষে নানামুখী চাপ ও বাধা থাকা সত্বেও ওই কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় সরকার।

এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিদেশে থাকায় অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এম কে রহমান র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ওই রিট আবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন। তবে  গ্রেফতার আবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে তার যুক্তি উপস্থাপন যথেষ্ট ছিল না বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।

গত ১৪ মে বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও তিন র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে হাইকোর্টের আদেশ ঠেকাতে আইনী লড়াইয়ে ব্যর্থ হওয়ায় এটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সমালোচনা করা হয়। বৈঠকে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুর কাছে আদালতের আদেশ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

এসময় মতিন খসরু বলেন, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দেশে থাকলে আদালত এই ধরনের আদেশ দিতে পারতো না। মাহবুবে আলমের অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন নাই।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলী  গোলাম আরিফ টিপুর সঙ্গেও এমকে রহমানের মত বিরোধ রয়েছে। যা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে সরকার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সব মিলিয়ে এম কে রহমানের প্রতি সরকারের অসন্তোষই তাকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত  বিচারালয়ে সরকারের পক্ষে আইনি লড়াই চালাতেই এটর্নি জেনারেল বা অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল পদে অস্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়। আর সরকারের পক্ষে কাজ করতে ব্যর্থ হলে ওই পদ  থেকে কাউকে বাদ দেওয়া হবে এটাই স্বাভাবিক।

এম কে রহমানকে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ গত মেয়াদে সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের মার্চে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পান এই আইনজীবী।

Leave a Reply