এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম একজন শামীম  জামান। বিশেষ করে গ্রামীণ পটভুমিতে নির্মাণ হওয়া নাটকে অভিনয়ের জন্য বেশ খ্যাতি রয়েছে তার। আর নির্মাণের ক্ষেত্রেও এ ধরনের গল্পই বেছে নেন তিনি। তবে এবার সে ধারা থেকে বেরিয়ে এসে নতুনত্ব নিয়ে এলেন শামীম জামান। শহুরে একটি গল্প নিয়ে কাজ করছেন তিনি। আর সেটি হচ্ছে আরটিভিতে প্রচার চলতি ধারাবাহিক নাটক ‘ঝামেলা আনলিমিটেড’। এরই মধ্যে এ নাটকটির বেশ কিছু পর্ব প্রচার হয়েছে। আগামী ২৯শে ডিসেম্বর ৫০ পর্ব প্রচার হবে বলে জানান শামীম জামান। ‘ঝামেলা আনলিমিটেড’ ধারাবাহিকের গল্প কিভাবে তার মাথায় এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাটকের গল্প তো চাইলেই বানানো যায়। কিন্তু আমি যা করি সেটা কিছুটা রিয়েলিস্টিক করার চেষ্টা করি। অনেক বছর আগে আমি ঢাকায় আসি। তখন মিরপুরে এক খালাতো বোনের বাসায় থাকি। সেখানে অতিথি হিসেবে যখন থাকা শুরু করি তখন বেশকিছু ঝামেলার মুখোমুখি হয়েছি। তাদের পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া, শহুরে বাড়িতে থাকার অভ্যাস করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়া সহ বেশকিছু ঝামেলা তৈরি হয়ে যায়। ঠিক তখন থেকেই আমি চিন্তা করি এই বাড়ির মানুষগুলোকে আমার একটি গল্পে রূপ দেয়ার। অনেক বছর পর গল্পটি লিখলাম। চিত্রনাট্য সাজালাম। সঙ্গে আরও কিছু নতুন চরিত্র আমি নিজেও যোগ করেছি। শহরের মানুষ নিয়ে নির্মাণ তো হলো। আর কিছুদিন পর আবারও শামীম জামান চলে যাবেন গ্রামের নাটকে। বাংলাভিশনের জন্য তেমন একটি নাটক নির্মাণ করবেন তিনি। এ গল্পটিও বেশ চমৎকার বলেই জানান । নতুন এ নাটকের নাম ‘চাকাম ঘর’। নির্মাণের পাশাপাশি শামীম জামান এ মুহূর্তে আরটিভির ‘অলসপুর’ ও মাছরাঙার ‘শেফলি’ ধারাবাহিক দুটোতে অভিনয় করছেন। নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ততার কারণে অনেক প্রস্তাব থাকলেও অভিনয় করা হয় না এ অভিনেতার। তাই আগের মতো হরহামেশাই পর্দায় দেখা মেলে না তার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাজের কারণে সময় দেয়া হয়ে ওঠে না। অভিনয়টা করার ইচ্ছা থাকলেও পারি না। দেখা যায়, আমার নাটকের শুটিং শেষ করতে করতেই রাত হয়ে যায়। তাহলে অন্যের দেয়া প্রস্তাব নেই কি করে। দীর্ঘদিন ধরেই নাটকের সঙ্গে আছেন শামীম জামান। নির্মাণ ও অভিনয় দুটোই করে চলেছেন তিনি। সে সঙ্গে চিত্রনাট্যের কাজও করছেন। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমান সময়ের নাটকের অবস্থা কেমন জানতে চাইলে বলেন, আগেই একটু বলে রাখি-আমাদের নাটকের মান কখনো খারাপ ছিল না। তবে এখন নানামুখি সমস্যায় আমরা নাটকে মার খেয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির কথা বলছি, আমাদের নাটকে ভালো স্ক্রিপ্টের খুব অভাব। লেখকরা চিত্রনাট্য লেখাটা বেশি পেশাদারী করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে কয়েকদিকে ছোটাছুটি করছেন। যে কারণে ভালো কাজ করতে পারছেন না। আরেকটা হলো শিল্পীদের সিডিউল। ঠিকভাবে তাদের সিডিউল পাওয়া যায় না। অনেকে আছেন যারা সময়মতো সেটে আসেন না। তাদের নিয়েও বিপাকে পড়ে যেতে হয়। আর বিজ্ঞাপনের আধিক্য, বাজেট সহ নানামুখি সমস্যা তো আছেই। এক কথায় হৃদয়ে দাগ কাটার মতো নাটক এখন কম। পর্দায় সদা হাস্যজ্জ্বোল শামীম জামান বাস্তব জীবনেও সবসময় বেশ হাসিখুসি থাকেন। নিজের ব্যক্তিজীবনটা  খুব উপভোগ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মিডিয়াতে কাজ করি। অনেকের ক্ষেত্রে এ নিয়ে ব্যক্তিজীবনে প্রভাব পড়তে দেখেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি অনেক ভালো আছি। পরিবারে স্ত্রীন্তান নিয়ে বেশ সুখে আছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।