এক যুগ আত্মগোপনে থাকার পর গ্রেপ্তার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাকির (স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা)
এক যুগ আত্মগোপনে থাকার পর গ্রেপ্তার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাকির (স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা)
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকির হোসেনকে ১২ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার সাভারের শাহীবাগ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম, ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ, খিলগাঁও ও সাভার এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। এক জায়গায় বেশি দিন থাকতেন না। পরিচয় গোপনে কিছুদিন পরপরই পেশা পরিবর্তন করতেন। গার্মেন্ট, স্পাইরাল বাইন্ডিং ও ঝুট ব্যবসার পর সবশেষ তিনি ছদ্মবেশে বাউল গানের দলের সঙ্গে ঘুরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক জানান, ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্ত্রী নিপা আক্তারকে নির্যাতন করতেন জাকির। এক পর্যায়ে বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি নিপা ওই দু’জনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলেন। তিনি বিষয়টি ভাশুর জাহাঙ্গীরকে বলে দেওয়ার ভয় দেখালে পরদিন রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা করেন জাকির। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তিন বছরের মেয়ে জ্যোতি কাঁদতে শুরু করলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ হত্যা মামলায় পাঁচ বছর কারাবাস শেষে ২০১০ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যান জাকির। পরে গত বছরের ১২ অক্টোবর মানিকগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত জাকিরকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
র্যাব-৪-এর মানিকগঞ্জ অঞ্চলের কোম্পানি কমান্ডার আরিফ হোসেন জানান, জামিন পাওয়ার পর জাকির আর কখনও মানিকগঞ্জের দৌলতপুর যাননি। তিনি ছদ্মপরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। সবশেষ সাভার যাওয়ার পর তিনি নিজেকে বাউল হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। এই পরিচয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ওই সংসারেও তাঁর দুটি মেয়ে রয়েছে। শুক্রবার তাঁকে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।