উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর

09/04/2018 10:42 amViews: 11

 

আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন

‘ক্যাম্পাসে গুলি কেন? উপাচার্য ঘুমিয়ে কেন’


ভিসির বাসভবনের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: তানভীর আহম্মেদ‘ক্যাম্পাসে গুলি কেন?’, ‘পুলিশ কেন?’, ‘উপাচার্য ঘুমিয়ে কেন?’—গতকাল রোববার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে এই প্রশ্ন করেন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। তাঁর বাসভবনে ঢুকে তাঁকে এ প্রশ্ন করেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালান। তছনছ করেন বাসভবনের শোয়ার ঘর, বাথরুম ও রান্নাঘর।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এই ভাঙচুর চলে। এ সময় উপাচার্য ছিলেন নিশ্চুপ। কিছু বলতে চান কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কার সঙ্গে কথা বলব? এরা তো কথাই শুনছে না।’

উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর। ছবি: প্রথম আলোকোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকায় গতকালের দিনভর আন্দোলন কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। শাহবাগে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের পুলিশ তুলে দিতে চাইলে দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিপেটা করে; গরম পানি ছিটিয়ে, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসায় ঢুকে পড়েন। বাসভবনের শোয়ার ঘর থেকে বাথরুম, রান্নাঘরসহ সবখানে ভাঙচুর চলে।

উপাচার্যের বাস ভবনে ভাঙচুর। ছবি: প্রথম আলোউপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর। ছবি: প্রথম আলোআন্দোলনকারীদের একাংশ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। তারা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। ফুলের টব ভেঙে ফেলে। শতাধিক শিক্ষার্থী নিচতলার তিনটি কক্ষে ভাঙচুর চালান। বাড়ির আসবাবপত্র ও ছবি ভাঙচুর করেন। বাথরুমের কমোড, বেসিন ভেঙে ফেলেন।

এরপর আন্দোলনকারীরা দোতলায় শোয়ার ঘরের জানলা, দরজা ভাঙেন। রান্নাঘরে ভাঙচুর চালান।

উপাচার্যের পরিবার বাসভবনের পেছন দিকে অবস্থান করে বলে প্রত্যক্ষর্দশীরা জানান।

আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের কাছে জানতে চান, তিনি কোটার পক্ষে না বিপক্ষে?

উপাচার্যের বাস ভবনে ভাঙচুর। ছবি: প্রথম আলোউপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর। ছবি: প্রথম আলো

উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী প্রক্টর, মোহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ নিজামুল হক ভূঁইয়া ও আরও কয়েকজন শিক্ষক যান। এ সময় সাংবাদিকেরাও সেখানে ছিলেন। সেখানে উপাচার্যকে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখা যায়। সেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনকেও দেখা যায়।

শিক্ষকেরা আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেন। পরে উপাচার্যকে বাইরে এনে চেয়ারে বসানো হয়। রাত আড়াইটার দিকে সেখানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক যান। তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন।

পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের একাংশ টিএসসি ও একাংশ কার্জন হলের দিকে চলে যায়।

উপাচার্যের বাসার গ্যারাজে রাখা দুটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আগুন ধরে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নেভাতে দেখা যায়।

এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় উপাচার্যের বাসভবন ও আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

Leave a Reply