উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
দাপটের সাথেই খেললো টাইগাররা। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজও নিশ্চিত হলো। দুরুন্ত বোলিংয়ের পর দারুণ ব্যাটিং। যথারীতি কোণঠাসা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সাফল্যে উদ্ভাসিত টিম বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে তামিম বিগ্রেড।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ রানে অল আউট ক্যারিবীয় শিবির। জবাবে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পৌছায় তিন উইকেট হারিয়ে ৩৩.২ ওভারে।
জিততে হলে করতে হবে ১৪৯ রান। বাংলাদেশের হয়ে শুরুটা দারুণ লিটন দাসের। ভাবা হচ্ছিল বড় ইনিংস আসবে তার ব্যাট থেকে। কিন্তু সেই তিনি সবার আগে আউট। আকিল হোসেনের বলে এলবিডব্লিউ। ২৪ বলে চারটি চারে ২২ রানে ফেরেন লিটন সাজঘরে।
আগের ম্যাচে শান্ত ফিরেছিলেন দ্রুত। এবার কিছুক্ষণ অন্তত থাকলেন তিন নম্বর পজিশনে। কিন্তু একবার জীবন পেয়েও সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ১৪ রানে জীবন পাওয়া শান্ত আউট হন ১৭ রানে মোহাম্মদের বলে ওটলির হাতে ক্যাচ দিয়ে। বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ৭৭।
এরপর অবশ্য সাকিবের সাথে তামিমের ব্যাটিং দলকে স্বস্তি এনে দেয়। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ১০৯ পযন্ত। বরাবর ৫০ রানে আউট হন তামিম রেইফারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তামিমের এটি ১৪তম ফিফটি, অধিনায়ক হিসেবে প্রথম। ৭৬ বলের ইনিংসে তামিম হাকিয়েছেন তিনটি চার ও একটি ছক্কা।
এই ম্যাচে নতুন মাইলফলক ছুয়েছেন তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে হাজার রান তার। জিম্বাবুয়ে ছাড়া এই প্রথম অন্য কোনো দলের বিপক্ষে হাজার রান ছুঁতে পারলেন বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ হাজার ৬০৪ রান তামিমের, ১ হাজার ৪০৪ রান সাকিবের, ১ হাজার ৩৬০ রান মুশফিকের।
চতুর্থ উইকেটে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সাকিব ও মুশফিক। রান খরায় ভুগতে থাকা সাকিব এদিন ব্যাট হাতে নিজের জাত চেনালেন। খেললেন অপরাজিত ৪৩ রানের রানের দারুণ এক ইনিংস। সাকিবের ৫০ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার। ২৫ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মুশফিকের এটি ছিল ২২০তম ম্যাচ। মাশরাফির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামলেই মাশরাফিকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে খেলা ক্রিকেটার বনে যাবেন মুশি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে উন্নতি বাড়তি কিছু রান প্রথম ওয়ানডের চেয়ে। ওপেনিংয়ে ছিল পরিবর্তন। অভিষিক্ত ওটলি। প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে এই ওটলিই করেছেন সবচেয়ে ভালো। তার ব্যাটে আসে ২৪ রান। অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ ১১ রান করেন। বাকি টপ অর্ডারদের কেউ ছুতে পারেননি দুই অঙ্কের রান।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও উইকেট শিকারের সূচনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান। ফেরান ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিসকে (৬) দলীয় ১০ রানের মাথায়।
৩৬ থেকে ৪১, পাচ রানের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারায় চার চারটি উইকেট। আর সেটা মিরাজ ও সাকিবের আগ্রাসী বোলিংয়ে। ৯ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে না পারা কাইল মায়ার্স হয়েছেন রান আউট।
৮৮ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতন ঘটে ৮ উইকেটের। ভাবা হচ্চিল শত রানের নিচেরই না গুটিয়ে যায় দলটি। তবে রভম্যান পাওয়েল-জোসেপদের দৃঢ়তায় তা হয়নি। আস্তে আস্তে দলটি পৌছে যায় প্রায় দেড়শর কাছাকাছি।
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪১ রান করে ফেরেন পাওয়েল। দুটি চার ও একটি ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি। জোসেফ করেন ১৭ রান। স্পিনার আকিল হোসেন ১২ রানে থাকেন অপরাজিত।
বল হাতে এদিন চমক দেখান বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯.৪ ওভারে ২৫ রানে চার উইকেট নেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মিরাজের এটি সেরা বোলিং ফিগার। সাকিব আল হাসান সেই তুলনায় জ্বলে উঠতে পারেননি এদিন। তারপরও বোলিং ফিগার দারুণই। ১০ ওভারে ৩০ রানে দুটি উইকেট নেন তিনি।
মোস্তাফিজু রহমান দারুণ ছন্দে। ৮ ওভারে তিন মেডেনে রান দিয়েছেন মাত্র ১৫। উইকেট দুটি। ইকোনমি রেট সবচেয়ে কম, ১.৮৮। আগের ম্যাচের মতো উইকেটশূন্য রুবেল হোসেন। ৯ ওভারে ৫৪ রানে ১ উইকেট হাসান মাহমুদের, প্রথম ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে অনেকটাই বিবর্ন তিনি।