ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন এক নারী ভোটার
ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৯ ঘণ্টা ভোট
এদিকে নির্বাচন শেষে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। নির্বাচনে ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা না হলেও শনিবারের মধ্যেই ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন, তা জানা যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ইরানের ৭৩ হাজার পাঁচ শ’ ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় থাকলেও ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চার দফায় সন্ধ্যা ৭টা, রাত ৯টা, রাত ১০টা ও রাত ১২টা পর্যন্ত সময় বাড়ায়। তবে করোনা মহামারীতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে আরো ভোটারদের অংশ দেয়ার জন্য রাত ২টা পর্যন্ত সময় বাড়ায় ইরানি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই বছর আগে থেকেই ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার শঙ্কা করা হয়েছিল। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, করোনা মহামারী ও জনপ্রিয় কয়েক জন প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন না পাওয়ায় ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অন্যান্যবারের তুলনায় কম হয়েছে।
তবে নির্বাচনে মোট কত ভোটার অংশ নিয়েছেন তা সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ইরানে মোট পাঁচ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার তিন শ’ সাতজন নিবন্ধিত ভোটার রয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সাথে সাথে দেশটিতে শহর ও গ্রাম কাউন্সিলের স্থানীয় সরকার নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচনের শুরুতেই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনি রাজধানী তেহরানের এক ভোটকেন্দ্রে তার ভোট প্রদান করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীরা তেহরানের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দান করেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি চার বছর মেয়াদে তার দুই দফা দায়িত্ব পালন শেষ করায় তৃতীয় বার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন না। ২০১৩ ও ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরপর দুই বার সংস্কারপন্থী এই নেতা নির্বাচিত হন। ইরানের আইন অনুসারে পরপর দুই দফা দায়িত্ব পালনকারী প্রেসিডেন্ট পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণকারী গার্ডিয়ান কাউন্সিল সাত প্রার্থীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়। বুধবার তিন প্রার্থী মোহসিন মেহের আলীজাদেহ, সাইদ জালিলি ও আলী রেজা জাকানি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে চারজন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। তাদের মধ্যে রক্ষণশীল তিন প্রার্থী; প্রধান বিচারপতি সাইয়েদ ইবরাহিম রইসি, ইসলামি বিপ্লবি গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান মোহসিন রেজায়ি, ডেপুটি স্পিকার আমির হোসাইন কাজীজাদেহ হাশেমি ও সংস্কারপন্থী প্রার্থী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আবদুল নাসের হেমমাতি।
মোহসিন মেহের আলীজাদেহ আবদুল নাসের হেমমাতির পক্ষে এবং সাইদ জালিলি ও আলী রেজা জাকানি সাইয়েদ ইবরাহিম রইসির পক্ষে প্রার্থিতা ত্যাগ করেছেন।
ইরানের নির্বাচন আইন অনুযায়ী নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীকে মোট ভোটের ৫০ ভাগ লাভ করতে হবে। কেউ ৫০ ভাগ ভোট অর্জনে ব্যর্থ হলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।