ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্টদের হতাশা!
ঢাকা: একদিকে যখন হ্যাকারদের আক্রমণে একের পর এক ওয়েবসাইট থেকে চুরি যাচ্ছে অনলাইনে রক্ষিত সব সংবেদনশীল তথ্য, অন্যদিকে তখন বিভিন্ন দেশের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থাসমূহের নজর অনলাইনে রাখা সব ব্যক্তিগত তথ্যের দিকেই। ক্রমেই নজরদারি আর গোয়েন্দা কার্যক্রমের এক শক্তিশালী খাতে পরিণত হচ্ছে ইন্টারনেট। সরকারি হস্তক্ষেপে ইন্টারনেটের উপর নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়েও শঙ্কিত বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেটের উপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের অবসান ঘটাতে এবং ইন্টারনেটকে সকলের জন্য উন্মুক্ত ও নিরাপদ রাখার প্রত্যয় নিয়ে ব্রাজিলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স বিষয়ক সম্মেলন নেটমুনডিয়াল। এই সম্মেলনে ব্রাজিলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এই সম্মেলনে ইন্টারনেট নিয়ে কার্যকরী অনেক আলোচনা হলেও দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়নি বলে ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকেই খানিকটা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তবে সম্মেলনের আয়োজক ওয়াননেট ফোরাম ও ব্রাজিল সরকারের ইন্টারনেট স্টিয়ারিং কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট আরও অনেক ব্যক্তিবর্গই এই আয়োজনকে সফল বলেই মনে করছেন। সম্মেলনে বক্তব্য রাখা সকলেই সরকারি হস্তক্ষেপ থেকে ইন্টারনেটকে মুক্ত রাখার জন্য মত প্রকাশ করেন। ইন্টারনেটের জন্য ‘গ্লোবাল মাল্টিস্টেকহোল্ডার কমিউনিটি’ নামে একটি কর্তৃত্বেরও পরিচয় হয় এ সময়। নেট নিউট্রালিটি এবং ম্যাস সারভাইলেন্সকে গুরুত্ব দিয়ে সম্মেলন শেষে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ঘোষণাপত্রে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইন্টারনেট ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণযোগ্য না হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। অনলাইনে সব ধরনের নজরদারি বন্ধের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সমালোচিত হওয়ায় এটি বন্ধের আহ্বানও জানানো হয়। তবে ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্টরা সরাসরি নজরদারি বন্ধের প্রত্যক্ষ কোনো শক্তিশালী পদক্ষেপ দেখতে চাইলেও সেটি না হওয়ায় তাদের অনেকেই হতাশ হয়েছেন। তবে ইন্টারনেট নিয়ে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এমন ধরনের একটি আয়োজন এই প্রথম এবং এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকটই উন্মুক্ত ইন্টারনেটের পক্ষে মানুষের প্রত্যাশার কথা কার্যকরভাবে পৌঁছে গেছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করছেন আয়োজকরা। দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা পাবেন বলেই প্রত্যাশা তাদের।