ইচ্ছা ও আত্মবিশ্বাস দুই-ই আছে মামুনুলের
ইচ্ছা ও আত্মবিশ্বাস দুই-ই আছে মামুনুলের
তাজিকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ দেখা ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বাংলাদেশ জিতেছিল সেই ম্যাচে। ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের যে চার প্রতিপক্ষ, তার মধ্যে একমাত্র এই তাজিকদের বিপক্ষে জয় আছে লাল-সবুজের। আজকের ম্যাচে মামুনুলদের জন্য সেটি অনুপ্রেরণাই হতে পারে। ২০১৫ তে অবশ্য এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না তাজিকিস্তানের কোচ মুখসিন। তার চাওয়া জয়। জয় চাওয়াটাও স্বাভাবিক। বাছাই পর্বে এ দুদলের শুরুটাও হয়েছে হার দিয়ে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ কিরগিজস্তানের কাছে হেরেছে ৩-১ গোলে। ওইদিনই তাজিকরা একই ব্যবধানে বিধস্ত হয়েছে জর্ডানের কাছে। আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিকাল পাঁচটায় শুরু হওয়া ম্যাচে যারা জিতবে গ্রুপে চতুর্থ হওয়ার দৌড়ে তারাই এগিয়ে যাবে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চূড়ান্ত পর্বে উঠতে না পারলেও সুযোগ থাকবে এশিয়ান কাপের মূল পর্বের।
১১ মাস কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি কিরগিজস্তান। এ কারণেই দলটির বিপক্ষে কোন হোমওয়ার্ক ছিল না বাংলাদেশের। নিয়মিত খেলার মধ্যে থাকলেও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে একই হাল স্বাগতিকদের। গতকাল পর্যন্ত তাজিকিস্তান দলটির পরিষ্কার কোন ধারণা নেই বাংলাদেশের। ভরসা শুধু জর্ডান ম্যাচ। ওই ম্যাচের ভিডিও এবং নিজেদের কৌশল নিয়ে আজ ফিফা র্যাঙ্কিয়ে ১৩৯-এ থাকা দলটির বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। একে তো শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে মধ্য এশিয়ার দলটি। তার ওপর এ ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। কিরগিজস্তানের বিপক্ষে কোচের প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি এমিলি, হেমন্ত, এনামুল, ইয়ামিন মুন্নাও। এ কারণে আজকের ম্যাচে একাদশে যে পরিবর্তন আসছে তা নিশ্চিত। গতকাল ম্যাচ পূর্ববতী সংবাদ সম্মেলনে এমনই আভাস দিলেন হেড কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। কৌশলেও পরিবর্তন আনার আভাস দিলেন এ ডাচম্যান। ‘আগামীকাল (আজ) আমাদের আরেকটি কঠিন পরীক্ষা। তাদের ফুটবলাররা বিভিন্ন দেশে খেলে থাকে। ওরা বাছাই পর্বে জর্ডানের কাছে হারলেও কৌশল ও নৈপুন্যে আমাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এ কারণেই আগে আমার লক্ষ্য থাকবে নিজেদের গোলমুখ রক্ষা করা, পরে আক্রমণে যাওয়া- বলেন এই ডাচ কোচ।’ তাজিক ম্যাচ নিয়ে অধিনায়ক মামুনুল বলেন, যদি এ ম্যাচে ব্যর্থ হই, তবে সব দায় খেলোয়াড়দেরই নিতে হবে। আমরা প্রস্তুত এ ম্যাচে ভাল খেলার জন্য। মনের ভেতরে রয়েছে দেশকে কিছু দিতে হবে। টিম বাংলাদেশ হিসেবে খেললে জয় পাবো ইনশাআল্লাহ, এবং এ ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’ হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে তাজিকিস্তানও। জর্ডানের বিপক্ষে বাছাই পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের মতো তারাও ৩-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছে। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে পালা। আর এ ম্যাচ সামনে রেখে তাজিক কোচ মুখসিন বলেন, ‘কাল (আজ) আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব একটা ভাল ধারণা নেই। তবে আমরা অনুশীলন, প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে এসেছি।’ এ যাবৎ তাজিকিস্তানের সঙ্গে ছয় ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে চারটিতেই হেরেছে মামুনুলরা। একটিতে জয় একটিতে হয়েছে ড্র। ২০১০ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের মূলপর্বে শ্রীলঙ্কায় তাজিকিস্তানকে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ হোম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে। তবে এসব পরিসংখ্যান নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই তাজিক কোচের। তার ব্যাখ্যা, ‘সেটা পাঁচ-সাত বছর আগে। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে আমরা পূর্ণ তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই খেলব।’ প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কিরগিজস্তান ম্যাচের কিছুটা অংশ দেখেছি। পুরোপুরি দেখা হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে এএফসি কাপের প্লে অফ খেলতে তাজিকিস্তানে গিয়েছিল বাংলাদেশের শেখ রাসেল। তাজিকিস্তানের এফসি খায়েরের বিপক্ষে ০-১ গোলে হেরেছিল তারা। তাজিকিস্তানের কোচ ওই ম্যাচটি দেখেছেন। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের ফুটবলারদের সম্পর্কে তার ধারণা, ‘বাংলাদেশের ফুটবলাররা আবহাওয়ার কারণে সেভাবে খেলতে পারেনি। তবে কয়েকজন ভালমানের ফুটবলার রয়েছে।’ এফসি খায়েরের একজন রয়েছেন এ স্কোয়াডে। তাজিকিস্তানের দুইজন ফুটবলার রয়েছেন যারা জার্মানিতে খেলেন। তারা ইনজুরির জন্য বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেননি। গতকাল ম্যাচের কৌশল ও ফরমেশন নিয়ে কিছু বলেননি তাজিক কোচ। বাংলাদেশ কোচও তাজিকদের নাগালের মধ্যেই ভাবছেন। আর এতেই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ২৭ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে জয়ের প্রত্যাশা করছেন ফুটবলাররা।