ইউরোপে গ্যাস রপ্তানিতে আফ্রিকার তিন দেশের সমঝোতা, সাহারার উপরে পাইপলাইন
ইউরোপে গ্যাস রপ্তানিতে আফ্রিকার তিন দেশের সমঝোতা, সাহারার উপরে পাইপলাইন
সাহারে মরুভূমি দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহে উদ্যোগ নিয়েছে আফ্রিকার তিন দেশ। রাশিয়ার উপর থেকে গ্যাস নির্ভরতা কমাতে যখন বিকল্প উৎস খুঁজতে মরিয়া ইউরোপ, তখনই এই উদ্যোগ নেয়া হলো। এরইমধ্যে এ নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে আলজেরিয়া, নাইজার ও নাইজেরিয়া। চুক্তি অনুযায়ী, সাহারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে।
ডয়চে ভেলের খবরে জানানো হয়েছে, মূলত রাশিয়ার গ্যাসের উপর থেকে নির্ভরতা কমাতে আফ্রিকাকে বিকল্প উৎস হিসেবে দেখছে ইইউ। আফ্রিকা গ্যাস রপ্তানিতে আগ্রহী হলেও তাদের সেই অবকাঠামো নেই। তাই এবার পাইপলাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে সেই সমস্যা দূর করা যাবে। এই পাইপলাইন সাহারা মরুভূমির মধ্যে দিয়ে যাবে। পাইপলাইন বানাতে খরচ হবে এক হাজার তিনশ কোটি ডলার। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে এক ট্রিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস নাইজেরিয়া থেকে নাইজার ও আলজেরিয়া হয়ে ইউরোপ পাঠানো যাবে।
আলজেরিয়ায় গ্যাস আসার পর হয় তা ভূমধ্যসাগরের নীচ দিয়ে পাইপলাইন করে অথবা এলএনজি ট্যাঙ্কারে করে ইউরোপে যাবে। ৪০ বছর আগে এভাবে গ্যাস ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
কিন্তু তারপর সেই প্রকল্প রূপায়ণের কাজ বিশেষ এগোয়নি। সাহেল অঞ্চলে আইএস ও আলকায়দার নিয়মিত হামলা, আলজেরিয়া ও নাইজারের মধ্যে উত্তেজনার কারণেই এতদিন ধরে পাইপলাইন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এখন পর্যন্ত রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪০ ভাগ গ্যাস ও ২৭ ভাগ তেলের চাহিদা মেটাচ্ছে। ইউরোপজুড়ে এই জ্বালানি ঘর গরম রাখতে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এতটা নির্ভরশীলতা হুট করে কমানো সম্ভব নয়। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইউরোপকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। অবশ্য এই নির্ভরশীলতা কাটাতে অন্তত আরো পাঁচ বছর প্রয়োজন।
রাশিয়া নিজেও ইউরোপকে শাস্তি দিতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে সংকটে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলি। তারাও এখন বিকল্প খুঁজছে। গত সপ্তাহে ইউরোপের দেশগুলি গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, শীতের সময় রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ আরো কম করে দেবে। ২০২১ সালে আলজেরিয়া ও নাইজার তাদের সীমান্ত আবার খুলেছে। এরপর আবার পাইপলাইন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এবার সমঝোতাপত্র সই হলো।