আল জাজিরায় শেখ হাসিনার সাক্ষাত্কার ‘জনগণের জন্য জীবন উত্সর্গ করতে আমিও প্রস্তুত’
আমার বাবার জীবন জনগণের জন্য উত্সর্গকৃত, আমি জানি। আমিও প্রস্তুত রয়েছি তাদের (জনগণের) জন্য জীবন উত্সর্গ করতে। কারণ, আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ আমাকেই শেষ করতে হবে।
শুক্রবার কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একঘণ্টার একটি সাক্ষাত্কার প্রচার করে। ওই সাক্ষাত্কারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রয়াত বৃটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের নেওয়া শেখ হাসিনার এই সাক্ষাত্কারটি আল জাজিরার সাইটে পাওয়া না গেলেও ইউটিউবে পাওয়া যাচ্ছে।
এ সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন এবং বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন।
‘স্বাধীনতার নায়ক বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক তথ্যচিত্রের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ১০ জুন থেকে ১২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাক্ষাত্কার নেন খ্যাতনামা এই সাংবাদিক।
১৯৭২ সালে ওই তথ্যচিত্রের কাজ শুরু করেন তিনি। তখন তিনি বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত্কারও নিয়েছিলেন।
সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ নেই, আদর্শিক বিরোধ। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তারা একসঙ্গে উপস্থিত হন বলেও তিনি আল জাজিরাকে জানান।
তিনি আরও বলেন, দু’জন নারী দেশের রাজনীতির নীতিনির্ধারক বলেই একটি শ্রেণী তাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত।
শেখ হাসিনা জানান, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। জনগণ চাইলে তিনি থাকবেন, না চাইলে থাকার কোন প্রশ্নই আসে না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে অস্বচ্ছতার কথা উড়িয়ে দেন শেখ হাসিনা। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ চলছে।
সাক্ষাত্কারের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বাবা বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের প্রসঙ্গ তুলে আবেগাপ্লুত হয়ে যান। এ সময় সাংবাদিক ফ্রস্টকেও বেশ কিছুক্ষণ নীরব থাকতে দেখা যায়।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে বসে এ সাক্ষাত্কার নেন ফ্রস্ট। ফ্রস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে টুঙ্গিপাড়াতেও যান।
১৯৩৯ সালে বৃটেনের কেন্টে জন্ম নেন ডেভিড ফ্রস্ট। ফ্রস্টই হচ্ছেন একমাত্র সাংবাদিক যিনি সাতজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ও ছয়জন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত্কার নেওয়ার বিরল অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
দীর্ঘদিন বিবিসিতে কাজ করার পর ২০০৬ সালে আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমৃত্যু এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট এই বিশিষ্ট সাংবাদিকের মৃত্যু হয়।