আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নাই মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রসুল মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী
হজরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হলেন। তার পরিধেয় বস্ত্র ছিল ধবধবে সাদা এবং মাথার চুল ছিল কুচকুচে কালো। সফরের কোনো আলামতও তার মধ্যে দেখা যাচ্ছিল না এবং আমাদের মধ্যে কেউই তাকে চিনতে পারছিলেন না। অবশেষে তিনি নবী (সা.)-এর নিকটে বসলেন এবং নিজের দুই হাঁটু তার দুই হাঁটুর সঙ্গে ঠেকিয়ে এবং নিজের দুই হাত তার দুই উরুর উপর রেখে বললেন, হে মুহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, ‘ইসলাম হচ্ছে, তুমি সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রসুল, নামাজ কায়েম করবে, জাকাত দেবে, রমজান মাসে রোজা রাখবে এবং হজে যাওয়ার সামর্থ্য থাকলে হজ করবে।’ আগন্তুক বললেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন।’ তার এ আচরণে আমরা বিস্মিত হলাম। তিনি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে প্রশ্নও করছেন আবার তার জবাব সমর্থন করছেন। পুনরায় তিনি বললেন, আমাকে ইমান সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, (ইমান এই যে) আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসুলগণ, আখেরাতের দিনের প্রতি এবং তাকদিরের ভালো-মন্দের প্রতি ইমান আনা। আগন্তুক বললেন, আপনি সত্যিই বলেছেন। তিনি আবার বললেন, আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত কর যেন তুমি তাঁকে দেখছ। যদি তুমি তাঁকে নাও দেখতে পাও তবে (মনে কর যে,) তিনি তোমাকে দেখছেন। আগন্তুক পুনরায় বললেন, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, ক্রীতদাসীরা তাদের মনিবকে প্রসব করবে এবং তুমি নগ্নপদ ও নগ্নদেহ গরিব মেষ চালকদের সুউচ্চ দালানকোঠা নির্মাণ করতে এবং তা নিয়ে গর্ব করতে দেখবে।
উমার (রা.) বলেন, অতঃপর আগন্তুক চলে গেলেন এবং আমি দীর্ঘক্ষণ সেখানে কাটালাম। অতঃপর নবী (সা.) আমাকে বললেন, হে উমার! তুমি কি জান প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা.)-ই অধিক জানেন। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন জিবরাঈল (আ.)। তোমাদের দীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন (বোখারি, মুসলিম, মিশকাত, কিতাবুল ইমান)
লেখক : ইসলামী গবেষক।