আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের গুণাবলি

05/05/2015 3:39 pmViews: 10

আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের গুণাবলি
মুফতি আবু হোরাইরা রায়পুরী

আল্লাহতায়ালা সুরা ফুরকানের শেষ অংশে তার প্রিয় বান্দাদের ১৩টি গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে বিশ্বাস, সংশোধন, দৈহিক ও আর্থিক যাবতীয় ব্যক্তিগত কর্মে আল্লাহ ও রসুল (সা.)-এর বিধান এবং ইচ্ছার অনুসরণ, অন্য মানুষের সঙ্গে সামাজিকতা ও সম্পর্ক স্থাপনের প্রকারভেদ, দিনরাত ইবাদত পালনের সঙ্গে আল্লাহভীতি, যাবতীয় গুনা থেকে বেঁচে থাকার প্রয়াস, নিজের সঙ্গে সন্তান-সন্ততি ও স্ত্রীদের সংশোধনচিন্তা ইত্যাদি শামিল আছে। প্রথম গুণ : আল্লাহর বান্দা হওয়া। আল্লাহর বান্দা হওয়ার যোগ্য সেই ব্যক্তি হতে পারে, যে তার বিশ্বাস, চিন্তাধারা ও প্রতিটি আচরণ পালনকর্তার আদেশের অনুগামী রাখে এবং যখন যে আদেশ হয়, তা পালনের জন্য সদা উৎকর্ণ থাকে। দ্বিতীয় গুণ : তারা পৃথিবীতে নম্রতাসহকারে চলাফেরা করে। খাঁটি মুমিনের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর সামনে হীন হয়ে থাকে। তৃতীয় গুণ : যখন অজ্ঞতাসম্পন্ন লোক তাদের সঙ্গে কথা বলে, তখন তারা শান্তিপূর্ণ ভাষায় কথা বলে; যাতে তার কথার দ্বারা অন্যেরা কষ্ট না পায় এবং তারা নিজেরা গুনাগার না হয়। চতুর্থ গুণ : তারা রাত যাপন করে তাদের পালনকর্তার সামনে সিজদা করা অবস্থায় ও দণ্ডায়মান অবস্থায়। রসুল (সা.) বলেছেন, নিয়মিত তাহাজ্জুত পড়। কেননা, এটা তোমাদের পূর্ববর্তী সব নেক বান্দার অভ্যাস ছিল। এটা তোমাদের আল্লাহর নৈকট্য দানকারী, মন্দকাজের কাফ্ফারাস্বরূপ। মাজহারি। রসুল (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি ইশার নামাজ জামায়াতের সঙ্গে আদায় করে, সে যেন অর্ধরাত্রি ইবাদতে অতিবাহিত করল এবং যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামায়াতের সঙ্গে আদায় করে, তাকে অবশিষ্ট অর্ধেক রাত্রিও ইবাদতে অতিবাহিতকারী গণ্য করা হয়। পঞ্চম গুণ : তারা দিনরাত ইবাদতে মশগুল থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকে না। বরং সব সময় আল্লাহকে ভয় করে এবং আখিরাতের চিন্তায় থাকে, যদ্দরুন কার্যত চেষ্টাও অব্যাহত রাখে এবং আল্লাহর কাছে দোয়াও করতে থাকে। ষষ্ঠ গুণ : তারা ব্যয় করার সময় অপব্যয় করে না এবং কৃপণতা ও ত্রুটি করে না বরং উভয়ের মধ্যবর্তী সমতা বজায় রাখে। সপ্তম গুণ : তারা ইবাদতে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে না। অষ্টম গুণ : তারা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে না। নবম গুণ : তারা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয় না। দশম গুণ : তারা মিথ্যা ও বাতিল মজলিসে যোগদান করে না। অর্থাৎ গান-বাজনা নৃত্যগীতের অনুষ্ঠানে যোগদান করে না। একাদশ গুণ : যদি অনর্থক ও বাজে মজলিসের কাছ দিয়ে তারা ঘটনাক্রমে কোনো দিন গমন করে তবে গাম্ভীর্য ও ভদ্রতা সহকারে চলে যায়। দ্বাদশ গুণ : তাদের যখন আল্লাহর আয়াত ও আখিরাতের কথা স্মরণ করানো হয়, তখন তারা শ্রবণশক্তি ও অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের মতো এগুলো সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে এবং তদনুযায়ী আমল করে। ত্রয়োদশ গুণ : তারা বলে, ‘হে প্রভু! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের জন্য চোখের শীতলতাস্বরূপ করে দিন এবং আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন’। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ওই গুণগুলো অর্জন করে তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply