আরো চাপে পড়তে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত
ঢাকা: চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় বিএনপি-জামায়াতকে নতুন করে চাপে ফেলছে৷ আর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হলে এই চাপ আরো বাড়তে পারে৷ এছাড়া আছে দুর্নীতির মামলা৷
বিএনপির নীতি নির্ধারকরা বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তিত৷ এদিকে, জামায়াত অস্ত্র মামলায় নিজামীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে৷ চেষ্টা করছে বিদেশি বন্ধুদের কজে লাগাতে৷
২০০৪ সালের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সেসময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং জামায়াত নেতা ও তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ গোয়েন্দা কর্তকর্তাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে৷ এছাড়া এই অস্ত্র চোরাচালানে তখনকার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সেই সময়ের আলোচিত হাওয়া ভবনের ভূমিকা নিয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত৷
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেছেন, ২০০৪ সালের ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশ্বাস এবং আস্থার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে৷ আর এ থেকে আমাদের ভবিষ্যতে শিক্ষা নেয়ার আছে৷
বিএনপি অবশ্য এই মামলার রায়কে ষড়যন্ত্রমূলক বলে মন্তব্য করেছে৷ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ দাবি করেছেন, যারা অস্ত্র আটক করেছে তাদেরই শাস্তি দেয়ায় প্রমাণ হয়েছে এটা প্রহসনের রায়৷ আর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ড. মকবুল আহমেদ এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অস্ত্র চোরাচালান মামলার রায় হয়েছে৷ তাদের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেয়ার প্রতিবাদে দলটি সোমবার সারাদেশ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে৷
আর পাকিস্তান জামায়াত এক বিবৃতিতে মুসলিম দেশগুলোকে হাসিনা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে৷ পাকিস্তান জামায়াতের আমির সৈয়দ মুনাওয়ার হাসান দাবি করেছেন নিজামীকে মিথ্যা মামলায় দণ্ড দেয়া হয়েছে৷
এদিকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারকাজও চলছে৷ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ওই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এই মামলার অধিকতর তদন্ত হয়৷ তাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী এবং তখনকার বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়৷
এই মামলায় আদালতে ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে৷
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, এপর্যন্ত ৭৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছেন আদালত৷ আরো ২০/২৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হবে৷ আর এই বছরেই মামলার বিচারকাজ শেষ হতে পারে৷
এদিকে, তারেক রহমান অর্থপাচার মামলায় খালাস পেলেও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে৷ তাকে আত্মসমর্পণের আদেশ দিয়েছেন আদালত৷ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির মামলা সচল আছে৷
অন্যদিকে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের একটি অংশ ইতিমধ্যেই যুদ্ধাপরাধ মামলায় দণ্ড পেয়েছেন৷ বাকিদের মামলাও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে৷
সবমিলিয়ে আরো মামলার চাপে পড়তে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত৷ এই মামলাগুলোর বিচারে দণ্ড হলে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ অনেক নেতা নির্বাচনের অযোগ্য হতে পারেন৷- ডিডব্লিউ।