আমি ভয় পাই না, এখনো রাস্তায় নামার সাহস রাখি : খালেদা জিয়া

01/07/2016 12:56 pmViews: 8
আমি ভয় পাই না, এখনো রাস্তায় নামার সাহস রাখি : খালেদা জিয়া

দেশ রক্ষায় দেশের মানুষকে টাইগারের ভূমিকায় আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি আপনাদের সঙ্গে সব সময় আছি, থাকব। রাস্তায় যেতে বললে এখনো রাস্তায় নামার মতো সাহস ও ক্ষমতা রাখি। আমি কথা বলতে চাই, ভয় পাই না। আমি সংবিধানের কথা বলব। তার আগে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি অন্য কারো হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে হোটেল সেরিনায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, সারা দেশের মানুষকে আজকে বিড়াল বানিয়ে রাখতে চায়। আর তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বাঘ, সিংহ সব কিছুই হতে চায়। কিন্তু এই টাইগারগুলো কোথায় গেল, আজকে সবাইকে টাইগারের ভূমিকায় আসতে হবে। লায়নের ভূমিকায় আসতে হবে। তাহলেই দেশটা রক্ষা করা যাবে। আসুন দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। আর সহ্য করা যায় না।

খালেদা জিয়া বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিভিন্ন উপদেশ দেন, কিন্তু সব কথা রাখতে পারি না। আমি বলব সবাইকে নিয়ে আসেন আমি কথা বলব, সবার কথা শুনবো। যেখানেই বসতে চান আমি বসব, কথা বলতে রাজি আছি। কারণ আমাদের সামনে কাজ হচ্ছে দেশটাকে রক্ষা করা।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওপর যদি না নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে মালয়েশিয়ার মতো দেশ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। তার চেয়েও উন্নত হতে পারে। সেই মেধাবী মানুষ আমাদের আছে। তিনি বলেন, বৃটিশ পার্লামেন্টে অত্যন্ত ভালো বিতর্ক হয়েছে। কাজেই অন্যরা আমাদের নিয়ে কথা বলেছে- আমরা কথা বলতে পারি না। কথা বললেই মামলা হবে। কথা বললেই ধরে নিয়ে যাবে, গুম হয়ে যাবে। কাজেই গুম খুনের ভয় করে লাভ নেই। এখন করছে আবার সুযোগ পেলেই করবে তারা।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বিডিআরের ৫৭ জন অফিসারকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো অবসরে পাঠানো হয়েছে। আজকে বিডিআর নেই। নামও বদলে দেয়া হয়েছে। আমি বিডিআরই বলে যাব। এরা এক সময় বাঘ ছিল এখন বিড়াল। তাদের হাতে বন্দুক আছে কিন্তু গুলি মারে না। দেশের মানুষকে বললে গুলিটা পট করে চালিয়ে দেবে। কিন্তু যদি বলেন, বর্ডারে লোক ঢুকে গেছে… সীমান্তে কেন গুলি মারতে পারে না। মিয়ানমারের মতো দেশ আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বিডিআর আজকে বাঘ থেকে বিড়াল হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকান্ডের কথা জানেন না। আপনারা কেন এগুলো নিয়ে কথা বলেন না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এর কি কোনো তদন্ত হয়েছে? কোনো তদন্ত হয়নি, কোনো বিচার হয়নি। আমরা জানি। সাহস নিয়ে এগুলো বলা উচিত। যদি সাহস থাকে এগুলো বলবেন।

ভারতকে ট্রানজিট দেয়া প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, যমুনা সেতুতে ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। বাস, ট্রাকের জন্য আলাদা ফি নির্ধারণ করা আছে। অথচ ১৯৫ টাকায় যে ট্রানজিট দেয়া হলো এটা লজ্জার, এটাকে দয়াও বলা যেতে পারে। আজকে বাংলাদেশে নিজস্বতা মান সম্মান নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা ও স্বাধীনতা নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যুদ্ধ করেছিলেন দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সুশাসন, সকলের সমান অধিকারের জন্য। আজকে দেশে এর কোনোটাই নেই। দেশে চলছে একব্যক্তির শাসন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই মঞ্চে ইফতার করেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, এলডিপির চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) আইন উদ্দিন, ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ।

এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শাহ. মোহম্মদ আবু জাফর ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

Leave a Reply