আমরা কোনোভাবেই পক্ষপাতিত্ব করতে চাই না, নির্বাচন না থাকলে রাজনীতি বিপদে পড়বে

27/07/2022 2:26 pmViews: 6

নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার   কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তার কিছু মূল্য থাকা উচিত। আমরা একেবারে যে ডিগবাজি খেয়ে যাবো, তা তো নয়। সেই সঙ্গে অর্থ শক্তি, পেশিশক্তির ব্যবহার আর ভোট চুরির অপসংস্কৃতির পরও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ওপর জোর দিয়ে সিইসি বলেছেন, নির্বাচন যদি না থাকে, তাহলে রাজনীতিরই বিপদ। গতকাল নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, আমাদের ওপর একটু আস্থা রাখুন। তবে আস্থা রাখতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না। আপনাদের নজরদারি থাকতে হবে। আমরা কি আসলেই সাধু পুরুষ, না ভেতরে ভেতরে অসাধু, সেই জিনিসটা আপনারা যদি নজরদারি না রাখেন, তাহলে আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব পালন করলেন না। আমাদেরকে কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ইসিকে তা জানানোর পরামর্শ দেন সিইসি।

তিনি বলেন, আপনারা আমাদের অবশ্যই চাপে রাখবেন। আমি বিশ্বাস করি, এটা প্রয়োজন আছে। আমাদের থেকে কোনো অনিয়ম লক্ষ্য করলে তা প্রকাশ করে দেবেন।

 আমরা কোনোভাবেই পক্ষপাতিত্ব করতে চাই না। ভোটে ইভিএমের ব্যবহার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, লাঠি দিয়ে, হকিস্টিক দিয়ে ইভিএম মেশিনটা ভেঙে ফেলতে পারবেন, কিন্তু এখানে ভোটের নড়চড় হবে না। ব্যালট পেপারের বিষয়ে তিনি বলেন, একটা কেন্দ্র দখল করে একজন লোক ১০০টা করে ৫ জন যদি ৫০০টা ভোট দেন তাহলে ভোট দিলো ৫ জন, কিন্তু কাউন্ট হলো ৫০০ জন। ভোটের হার অনেক বেড়ে গেল। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। সমস্যাগুলোকে আমরা কীভাবে ব্যালেন্স করে অর্থবহ এবং যতদূর সম্ভব নিরপেক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায় সে কথা বলা হচ্ছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রতিনিধি দলের কাছে প্রশ্ন রেখে সিইসি বলেন, অর্থ শক্তিকে কীভাবে সামাল দেবো? আপনি আমাকে একটা বুদ্ধি দেন। এটা এখন একটা সংস্কৃতি, দেশে অর্থ বেড়েছে। আমাদের সবার বাড়িতে বস্তা বস্তা অর্থ। আর বস্তা বস্তা অর্থ আমরা নির্বাচনে ব্যয় করি। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কীভাবে? যেটা প্রকাশ্যে হয়, নির্বাচন কমিশন সেই কাগজপত্র সংগ্রহ করে।

সেখানে দেখানো হলো যে, আমি ৫ হাজার টাকা খরচ করেছি। তার বাইরে গিয়ে গোপনে যদি আমি ৫ কোটি টাকা খরচ করি, কীভাবে আমাকে ধরবেন বা আমি কীভাবে ধরবো? এটাও সম্ভব, এটার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সিইসি বলেন, পলিটিক্স থেকে কিন্তু গণতন্ত্রের জন্ম। গণতন্ত্র থেকে পলিটিক্সের জন্ম হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনটিকে যদি বাঁচিয়ে রাখা না যায়, তাহলে পলিটিক্স উধাও হয়ে যাবে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই প্রতিশ্রুতির কিছু মূল্য থাকা উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাবো, তা তো না। সেটা হওয়ার কথা নয়। এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার নয়, সেনা চায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী লিখিত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে।

এ ছাড়া সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, বাংলাদেশের ভোটার জনতার অধিকাংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয় বিধায় ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটেই ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনকালীন স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।  অন্যদিকে ত্রুটিমুক্ত নয়, মানুষ এখনো অভ্যস্ত হয়নি ইত্যাদি তকমা দিয়ে একাধিক রাজনৈতিক দল যখন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) চাচ্ছে না তখন এই যন্ত্রটি দিয়ে ৩০০ আসনে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহি. বি চৌধুরী বলেন, মানুষ যদি বিশ্বাস করে বর্তমান ইসি’র অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, তবে সকলেই নির্বাচনে আসবে। এ সময় তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর পোশাক দেখলেই মানুষের আস্থা বেড়ে যায়। সেনাবাহিনী যদি ভোটকেন্দ্রে থাকে, পাঁচ জন করেও যদি থাকে তবে অনেক আস্থা বাড়ে। ৩০০ আসনেই ইভিএমে ভোটের মাধ্যমে বড় ধরনের পরিবর্তন নির্বাচনী ব্যবস্থায় আসবে।

Leave a Reply