আবেগ আর উচ্ছ্বাসে মুস্তাফিজকে বরণ করলো সাতক্ষীরাবাসী
আবেগ আর উচ্ছ্বাসে মুস্তাফিজকে বরণ করলো সাতক্ষীরাবাসী
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপন, আবেগ আর উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গর্ব, ক্রিকেট বিশ্বের বিষ্ময় বালক মুস্তাফিজুর রহমানকে বরণ করে নিল তার প্রিয় জন্মভূমি সাতক্ষীরার সর্বস্তরের জনতা। দীর্ঘ ৩ মাস পর শনিবার বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে যশোর বিমান বন্দর থেকে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে এসে পৌছান ‘ভারত বধ’ এর নায়ক মুস্তাফিজুর রহমান।
বাবা মা’র সাথে মুস্তাফিজ
সার্কিট হাউজে পৌছানোর সাথে সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান মুস্তাফিজকে মিষ্টিমুখ করান এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। দীর্ঘদিন পর নিজ জেলা সাতক্ষীরার মাটিতে পা রেখে মুস্তাফিজ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, সাতক্ষীরাবাসির দোয়া ও আশির্বাদে আজ আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। সুযোগ পেলে সামনে আরও ভাল কিছু করতে চাই। এ পর্যন্ত জাতীয় দলে সাতক্ষীরা থেকে তিনজন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছে। আমি আশা করি সামনে আরও অনেক খোলোয়াড় সাতক্ষীরা থেকে সুযোগ পাবে।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এ এফ এম এহতেশামূল হক, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজামউদ্দীন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাাফিজুর রহমান উজ্জল, মুস্তাফিজের ক্রিকেট গুরু মোফাসিনুল হক তপু, তার সেজ ভাই মোখলেসুর রহমান পল্টুসহ জেলা প্রশাসন, ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং তার গ্রামের বাড়ি থেকে আসা স্বজনরা।
এর আগে যশোর থেকে ফেরার পথে পাটকেলঘাটায় খালার বাড়িতে গেলে সেখানেও স্বজনসহ ওই এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান মুস্তাফিজকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসকের সম্মাননা শেষে মুস্তাফিজকে বরণ করতে যশোর বিমানবন্দরে যাওয়া এলাকাবাসী ও স্বজনদের গাড়ি বহর নিজ গ্রাম কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে সাতক্ষীরা এ,কে ট্রাভেলস্ কর্তৃপক্ষ তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরবর্তীতে দেবহাটার জগন্নাথপুরে নানার বাড়ি এলাকায় পৌছালে সেখানেও তাকে ফুলেল সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরপর তারালী বাজারে সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা শেষে তেঁতুলিয়া গ্রামে পৌছালে বৃষ্টির মধ্যে তাকে বরণ করতে আসা হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলিয়ে নিজ বাসভবনে পৌছান মুস্তাফিজ। এসময় মুস্তাফিজের বাড়িতে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিমুল কুমার সাহা, তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল্যাহ, সহকারী উপ-পরিদর্শক সাগরসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মুস্তফিজের পিতা আলহাজ্জ্ব আবুল কাশেম ও মা মাহমুদা খাতুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার মুখে মিষ্টি তুলে দেন। সাংবাদিকদের কাছে অনভুতি ব্যাক্ত করতে গিয়ে বলেন, জাতীয় দলে যাদের সহযোগিতায় সুযোগ পেয়েছেন তাদের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। ক্রিকেট নিয়ে তার ভবিষ্যত কোনো সূনিদিষ্ট পরিকল্পনার কথা না থাকলেও দেশের জন্য ভাল কিছু করার প্রত্যয় আছে তার।গত ১৯ মে তিনি শেষবারের মতো নিজের বাড়ি ছেড়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাতক্ষীরার বাড়ি ছেড়েছিলেন অনেকটা নীরবে-নিভৃতে। এর আগে অবশ্য জাতীয় দলে অভিষেকটা হয়ে গেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকেই নজর কেড়েছিলেন তিনি। শহীদ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ হাফিজের দুই উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ সম্ভাবনাময় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস খ্যাত মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদী মানুষ ও ক্রিকেট বিশ্ব এখন দেখছেন মুস্তাফিজের কার্টার যাদু দিয়ে একের পর উইকেট শিকারের দৃশ্য।