আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাল্টাপাল্টি শপথ আশরাফ গনি-আবদুল্লাহর
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাল্টাপাল্টি শপথ আশরাফ গনি-আবদুল্লাহর
দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্টের পদে বসলেন আশরাফ গনি। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। একই সাথে অভিষেক অনুষ্ঠান করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহও। তারা উভয়েই দাবি করে আসছিলেন যে তারা সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন। এবার তারা দুজনেই অভিষেক অনুষ্ঠানে নিজেদেরকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। ফলে এখন আফগানিস্তান এমন দেশ যেখানে এক সাথেই দুই প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট পদে দুইজনের শপথ নেয়া এমন একটি কাজ, যার ফলে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। আফগানিস্তানকে বড়সড় বিপদের মধ্যে পড়তে হতে পারে। এসব থেকে দেশকে ফের স্থিতাবস্থায় আনতে আশরাফ গনি পারবেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
প্রায় ১০০ জনের উপস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের জন্য দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন আশরাফ গনি। আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন বিদেশি অতিথি, কূটনীতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি পবিত্র ধর্ম ইসলামকে সম্মান করব ও সুরক্ষিত রাখব। একই সঙ্গে দেশের সংবিধানের তদারকি করব ও তার ঠিকঠাক প্রয়োগ করব।’
তালেবানের সাথে আলোচনার জন্য আফগান সরকারকে চাপ দেয়ার চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ে পাল্টাপাল্টি সরকার গঠন একটি রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরস্পর বিরোধী হুমকি দেশটিতে একটি নতুন শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন গনিকে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তবে আবদুল্লাহ দাবি করেছিলেন যে তিনি ও তার সহযোগীরা এই নির্বাচনে জিতেছেন এবং তিনি সরকার গঠন করবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছিলেন যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলটি প্রতারণামূলক।
গনি ও আবদুল্লাহ হলেন পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তির অধীনে পূর্ববর্তী সরকারে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিদায়ী সরকারে বিশেষভাবে তৈরি করা নির্বাহী প্রধান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সংহতির অভাব মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তালেবানের সাথে আলোচনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে। এটি শান্তি প্রক্রিয়াটির জন্য খারাপ সংবাদ ও একটি অশুভ সঙ্কেত।
সোমবারের আগে সমাধানে মধ্যস্থতার চেষ্টা হিসেবে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগান বিষয়ক বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষক আতা নূরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যদি তারা শান্তি আলোচনার টেবিল সফল ও সার্থক করতে চান তবে ঐক্যই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায়।’
খলিলজাদ দুইটি পক্ষের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার ব্যবস্থাটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। আফগানিস্তানের পক্ষে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনের ব্যাপারে একজন আফগান বলেন, ‘এক দেশে দু’জন প্রেসিডেন্ট থাকা অসম্ভব। উভয়েই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পরিবর্তে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য তাদের একে অপরের সাথে কথা বলা উচিত।’ সূত্র : এএফপি ও বিবিসি