আফগানিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশ
সুপার ফোরে খেলতে জয়ের বিকল্প ছিল না। তবে সব শর্ত পূরণ করেই জিতলো বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে ২৭৯ রানের মধ্যে আটকাতে পারলে সুপার ফোর নিশ্চিত- এমন সমীকরণ সামনে রেখে সাকিবের দল আফগানদের ২৪৫ রানে গুঁড়িয়ে দিলো। গতকাল এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৯১ রানে পরাজিত করে বাংলাদেশ। এতে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার ফোরে খেলা নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। এটি ছিল টাইগারদের বাঁচা মরার-লড়াই।
লাহোরে ইংনিস শেষে সবই ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। আগে ব্যাটিং শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ পৌঁছে ৩৩৪/৫-এ। এশিয়া কাপে এটি বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। অন্যদিকে ৩০০ বা এর বেশি রান তাড়া করে কখনো ওয়ানডে জেতেনি আফগানিস্তান। ম্যাচের ভেন্যুর পরিসংখ্যানও ছিল টাইগারদের জন্য আশাব্যঞ্জক। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে এত রানের সংগ্রহ নিয়ে হারের ঘটনা মাত্র একটি। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩৪৯ রানের লক্ষ্য স্বাগতিক পাকিস্তান পেরিয়ে গিয়েছিল ৬ বল ও ৫ উইকেট বাকি থাকতে। তবে গতকাল তেমন কিছু ঘটতে দেয়নি টাইগাররা। আফগানিস্তানের ইনিংসের মাত্র দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানে বাংলাদেশ।
নজিবুল্লাহ জাদরানের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন হাশমতউল্লাহ। ৩৬ ওভার শেষে ১৯৩/৩ সংগ্রহ নিয়ে সম্ভাবনা ধরে রাখে আফগানিস্তান। তবে এরপর অল্প ব্যবধানে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল রাখে টাইগাররা। ব্যক্তিগত ১৭ রানে নজিবুল্লাহ জাদরানকে সাজঘরে ফেরান অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। এক পাশ আগলে ফিফটি তুলে ফেলা হাসমতউল্লাহ শহীদী উইকেটে জমে গিয়েছিলেন। আফগান অধিনায়ককে আউট করে দলের স্বস্তি ফেরান শরীফুল ইসলাম। থার্ডম্যানে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে হাশমতউল্লাহ করেন ৬০ বলে ৬ চারে ৫১ রান। এরপর একটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে মোমেন্টাম নিতে চেষ্টা করেন গুলবদিন নায়েব। তবে ১৩ বলে ১৫ রান করা গুলবদিনকে সরাসরি বোল্ড করে দেন শরীফুল। ৪০ ওভার শেষে ২১২/৬ সংগ্রহ নিয়ে টার্গেট আরও কঠিন হয় আফগানদের। আর বাঁহাতি সতীর্থের তাণ্ডব শেষে দায়িত্ব নেন তাসকিন আহমেদ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন সাকিব আল হাসান। আর ব্যাট হাতে দাপট ধরে রেখে জোড়া সেঞ্চুরিতে দলকে বড় পুঁজি এনে দেন ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ (১১২) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (১০৪)। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব বলেন, সব মিলিয়ে চৌকস ক্রিকেট খেলেছি আমরা। ৫০ ওভার ফিল্ডিং করার পর ব্যাট করতে নামা সহজ নয়। আমাদের সৌভাগ্য আমার টসে জিতেছি। মিরাজ সুযোগ পেয়ে আবারো নিজেকে প্রমাণ করলো। আমরা তার সক্ষমতার কথা জানি। আমার আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। ফাস্ট বোলাররা জান দিয়ে বল করেছে। এমন পিচে বোলিং করা সহজ নয়।’ খেলা শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে মিরাজের হাতে। পরে মিরাজ বলেন, আমি সত্যিই খুশি। টি ম্যানেজম্যান্ট আমার ওপের বিশ্বাস রেখেছে। এটা চমৎকার উইকেট, সহজেই বল ব্যাটে আসছিল, আমি শুধু ‘থ্রু দ্য লাইন’ খেলতে চেষ্টা করেছি।’ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ সংগ্রহটি ছিল ৩ উইকেটে ৩২৬ রান। যদিও ২০১৪ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচটি হেরেছিল বাংলাদেশ।