আপনার আসল বয়স

23/09/2013 7:15 pmViews: 13

t6561.thumbnailডেস্কঃ জানার শেষ নেই। মানুষ যত শেখে, নিজের জ্ঞানকে তার ততই সীমিত মনে হতে থাকে। কারণ, জ্ঞানের প্রতিটি নতুন দরজাই মানুষের সামনে অকল্পনীয় দিগন্ত খুলে দেয়। তাই আমরা আসলেই কতটুকু জানি বা আমাদের জানাটা কতটা সত্যি, সেই পুরোনো প্রশ্ন আমাদের সামনে ফিরে ফিরে আসে।বর্তমান যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জানার না-জানার এই আপাত-বৈপরীত্যের প্রসঙ্গটি নতুন করে প্রকাশিত হচ্ছে। সহজ অনেক প্রশ্নের উত্তরেও মানুষ ভুল করে। যেমন: আপনার বয়স কত? এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত হচ্ছে, চলতি বছর থেকে জন্মসাল বিয়োগ করলেই বয়স পাওয়া যাবে। আর বয়স গোপন রাখতে আগ্রহীদের সাধারণ উত্তরটা হয় এ রকম: ‘এটা আপনার জানার বিষয় নয়।’কিন্তু আসল তথ্য হচ্ছে, মানবদেহের একটা বড় অংশের বয়স প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি বছর। আমাদের শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশই পানির হাইড্রোজেন পরমাণুর তৈরি। মহাবিস্ফোরণের (বিগ ব্যাং) পরপরই তৈরি হয় এই অতি ক্ষুদ্র কণা বা পরমাণু।আবার শরীরের বেশির ভাগ অংশের বয়স আমাদের নিজস্ব বয়সের চেয়ে কম। ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম: আমাদের বয়স ১০ বছর হলে শরীরের ওই অংশগুলোর বয়স সাত বছর। সুইডেনের কোষবিজ্ঞানী জোনাস ফ্রিজেন মানবদেহের কোষের বয়স নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। এটি ব্যবহার করে দেখা যায়, ৩০-এর কাছাকাছি বয়সী মানুষের মাংসপেশি ও পাঁজর থেকে সংগৃহীত কোষগুলোর গড় বয়স ১৫ বছর এক মাস।ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখা যায়, অন্ত্রের উপরিভাগের কোষ মাত্র পাঁচ দিন বেঁচে থাকে। লোহিত রক্তকণিকা বাঁচে প্রায় ১২০ দিন পর্যন্ত। আর ত্বকের বাইরের আবরণ বা স্তর প্রায় প্রতি দুই মাস পর পর নতুন করে গঠিত হয়। আর সম্পূর্ণ কঙ্কালটি প্রতি ১০ বছর পর পর নতুন করে প্রতিস্থাপিত হয় বলে গবেষকেরা ধারণা করেন। শরীরের একমাত্র যে অংশগুলো আজীবন টিকে থাকে, সেগুলো হলো মস্তিষ্কের বাইরের অংশের স্নায়ুকোষ, চোখের লেন্সের ভেতরের অংশের কোষ এবং হূৎপিণ্ডের মাংসপেশির প্রায় অর্ধেক কোষ। বিজ্ঞানীরা এখন বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে ওষুধ প্রয়োগ বা অন্য কোনো উপায়ে কোষের নবায়নের প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার উপায় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলে স্নায়ুকোষ উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বিষণ্নতা রোগের চিকিৎসায় অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে।আর মানুষ যদি কোষের পুনর্জন্ম নিয়ন্ত্রণের সামর্থ্য অর্জন করতে পারে, তাহলে জীববিজ্ঞান গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। ক্রমবিকাশের মাধ্যমে ডিএনএতে সংরক্ষিত তথ্যাবলি উদ্ঘাটন অথবা হয়তো স্টেম সেল ব্যবহার করে নতুন কোষ তৈরির মাধ্যমে বয়স্ক কোষগুলো প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। আর এ ব্যাপারে আমরা যতই জানব, ততই মনে হবে যে অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে! সিডনি মর্নিং হেরাল্ড।

Leave a Reply