আজ ‘মীনা দিবস’ ‘মানসম্মত শিক্ষা পেলে শিশুবিবাহ ও শিশুশ্রম রোধ হবে’

23/09/2013 7:05 pmViews: 23

অভিজিত্ ভট্টাচার্য্য : মীনা। এই ছোট্ট মেয়েটি অনেক আগেই এ দেশে সবার মন জয় করে নিয়েছে। শিশুরা তো বটেই, সব বয়সের মানুষের কাছে মীনা হচ্ছে একটি প্রিয় মুখ। ছোট হয়েও মীনা তার কাজ ও বুদ্ধি দিয়ে চারপাশের সবাইকে যেভাবে মুগ্ধ করেছে— তা এক কথায় অসাধারণ।

মীনার পোষা টিয়া পাখি মিঠু, ছোট ভাই রাজু যেন সবারই আপনজন। দারুণ বুদ্ধিমতী মীনা খুব সহজেই কঠিন সব সমস্যার সমাধান করে বড়দের রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেয়। ভেঙে দেয় অনেক ভুল ধারণা।

এ হচ্ছে টেলিভিশনে দেখা বিখ্যাত মীনা কার্টুনের মূল চরিত্র মীনার কথা।

আজ মঙ্গলবার ‘মীনা দিবস’। ১৯৮৯ সাল থেকে দেশে প্রতিবছর ২৪ সেপ্টেম্বর মীনা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘মানসম্মত শিক্ষা পেলে শিশুবিবাহ ও শিশুশ্রম রোধ হবে’।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শতভাগ শিশুর ভর্তি, ঝরেপড়া রোধ ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের জন্য মীনা দিবস পালিত হয়ে থাকে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে (লেভেল-২) আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মীনা দিবসের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ড. মো. আফছারুল আমীন। মীনা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী আখতার হোসেন এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন মিস্ অঞ্জনা মঙ্গলা গিরি।

এ উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে থাকবে পাপেট ও মাপেট শো। এ ছাড়া শিক্ষা উন্নয়নবিষয়ক গণসংগীত ও গণনাট্য পরিবেশন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ তথা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণ, সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, বাল্যবিবাহ রোধ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষার গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয় সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় এই কার্টুন চরিত্রটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে। মীনা কার্টুনটি ইউনেসকোর উদ্যোগে নির্মিত। কার্টুনের প্রধান চরিত্র শিশু মীনা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নারী শিক্ষার প্রসারে সচেতনতা গড়ে তোলাই এই কার্টুনের লক্ষ্য।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন বলেন, মৌলিক চাহিদার ক্ষেত্রে পরিবারের শিশু, মাতা-পিতা এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও আচরণের পরিবর্তন আনাটাই হচ্ছে মীনা দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য। বিদ্যালয়ে নিয়মিত শিশুর উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং ঝরেপড়া রোধে প্রয়োজন বিদ্যালয়ে শিশুবান্ধব পরিবেশ, যেখানে শিশুদের কোনো শাস্তি ও বকা দেয়া হবে না এবং শিশুরা আনন্দের সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করবে। শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখার প্রয়াসে এ বছর মীনা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘মানসম্মত শিক্ষা পেলে শিশুবিবাহ ও শিশুশ্রম রোধ হবে’।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে মানসম্মত শিক্ষা অর্জন ও ঝরেপড়া রোধে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ একটি অন্যতম কার্যক্রম। এর অংশ হিসেবে মীনা দিবস উদযাপন, জনপ্রিয় মীনা কার্টুন ও মীনাবিষয়ক বইয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, মীনা দিবস উদযাপনের ফলে দেশের শিক্ষাবঞ্চিত মানুষ শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন ও উত্সাহী হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষাগ্রহণেও আগ্রহী হবে। এ ছাড়া মীনা দিবসের বিভিন্ন কার্যক্রম প্রচারের ফলে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান বেড়েছে। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণে শিক্ষামূলক বিনোদন মাধ্যম হিসেবে সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে এই দিবস।

Leave a Reply