আজ জন্মাষ্টমী
আজ শনিবার শুভ জন্মাষ্টমী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জন্মতিথি। সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই দিনে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথিকে ভক্তরা শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদযাপন করেন। কৃষ্ণপক্ষের অষ্টম তিথির এই দিবসটিকে জন্মাষ্টমী হিসেবে পালন করা হয়। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এই দিবসটিকে কৃষ্ণাষ্টমী, গকুলোষ্টমী, শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তি, অষ্টমী রুহিনীসহ বিভিন্ন নামে পালন করে থাকে। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও নেপালে এই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মন্দিরগুলোকে দৃষ্টিনন্দন ও আলোকোজ্জ্বল করে সজ্জিত করা হয়। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে সমাজে বিদ্যমান ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করে জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে তা প্রয়োগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। তিনি তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্যদিয়ে সত্য ও সুন্দরের আরাধনা করেছেন। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। তার এই আদর্শ বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে ভক্তদের অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, বৈষম্য, অন্যায়-অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে যার যার অবস্থানে থেকে আমাদের সবাইকে অবদান রাখতে হবে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা-অর্চনা, হরিনাম সংকীর্তন ও নামযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। মন্দির ছাড়াও ঘরে ঘরে ভক্তরা উপবাস থেকে জন্মাষ্টমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করবেন। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও রামকৃষ্ণ মঠসহ বড় বড় মন্দিরে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে গীতা পাঠ, আলোচনা সভা, শ্রীকৃষ্ণ পূজা, নামযজ্ঞ, শোভাযাত্রা, কীর্তন ও প্রসাদ বিতরণ।