আজীবন সম্মাননা পেলেন সোহেল রানা ও সুচন্দা
আজীবন সম্মাননা পেলেন সোহেল রানা ও সুচন্দা
চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১৯-এর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ যৌথভাবে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন চলচ্চিত্রের জ্যেষ্ঠ অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ও কোহিনুর আক্তার সুচন্দা।
আজ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় ৪৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রদানের আসর। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এমপি।
সোহেল রানার পারিবারিক নাম মাসুদ পারভেজ। চলচ্চিত্রে ‘সোহেল রানা’ নামে পরিচিত তিনি। ১৯৭২ সালে মাসুদ পারভেজ নামে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন তিনি।
তিনি ‘মাসুদ রানা’র ছবির মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সোহেল রানা তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
কোহিনুর আক্তার সুচন্দার জন্ম যশোরে। ষাটের দশকে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। সত্তরের দশকে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘জীবন থেকে নেয়া’ এবং নব্বইয়ের দশকের ‘ঝিনুক মালা’ ছবির জন্য সবচেয়ে বেশি খ্যাতি কুড়িয়েছেন তিনি।
এছাড়া ১৯৯৬ সালে ‘সবুজ কোট কালো চশমা’ এবং ২০০৫ সালে স্বামী জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ ছবিটি পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন সুচন্দা। মুক্তির বছরই সেরা ছবি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় ‘হাজার বছর ধরে’। আর তিনি এই ছবির জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন।
১৯৭৬ সালের ৪ এপ্রিল প্রথম চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়। ২০০৯ সালে প্রথম চালু করা হয় আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রজ্ঞাপন জারি হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের তালিকা-
আজীবন সম্মাননা (যুগ্ম): বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) এবং অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (যুগ্ম): ন ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন।
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিলো অন্ধকারে।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে: তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে: সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন ডরাই)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে: এম ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হাওয়ায়)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে: নারগিস আক্তার (হোসনে আরা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খল চরিত্রে: জাহিদ হাসান (সাপলুডু)।
শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী (যুগ্ম) নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ইমন (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)।
শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃনাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো…) (শাটল ট্রেন)।
শ্রেষ্ঠ গায়িকা (যুগ্ম): মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয-যাহরা ঐশী (মায়া, মায়া রে…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ গীতিকার (যুগ্ম): নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার…) (কালো মেঘের ভেলা) ও ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী) (চল হে বন্ধু চল…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ সুরকার (যুগ্ম): প্লাবন কোরেশী (আব্দুল কাদির) (বাড়ির ওই পূর্বধারে…) ও সৈয়দ মো. তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল…) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুদ পথিক (মাসুদ রানা) (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন ডরাই)।
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমদ হালিম (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক (যুগ্ম): মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বাসু ও মো. ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)।
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন ডরাই)।
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন ডরাই)।
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা: খোন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়) এবং
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: মো. রাজু (মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
১৯৭৬ সালের ৪ এপ্রিল প্রথম চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়। ২০০৯ সালে প্রথম চালু করা হয় আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।