আগামীকাল ঢাকায় শুরু হচ্ছে এফএও’র এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন

07/03/2022 4:44 pmViews: 2

আগামীকাল ঢাকায় শুরু হচ্ছে এফএও’র এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন (এপিআরসি৩৬) শুরু হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন ৮ই মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১১ই মার্চ। এ সম্মেলনে ৪৩টি দেশ ও এসব দেশের প্রধানমন্ত্রী/মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের ৪২ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া, সদস্য রাষ্ট্র, এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রায় ৯০০ জন নিবন্ধন করেছেন, যা এপিআরসি সম্মেলনে অংশগ্রহণের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

আজ সোমবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এফএও’র ৩৬তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য জানান।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। বাংলাদেশ প্রথমবারের মত এ ধরনের একটি সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এশিয়া এবং প্যাসিফিকভুক্ত ৪৬টি দেশের কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব, এফএও’র মহাপরিচালক এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে আনবে এবং বাংলাদেশের কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এফএও’র সদস্যভুক্ত হয়। তারপর থেকে এফএও দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের কৃষিতে বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা মোকাবেলা করে কৃষিকে টেকসই করা, জলবায়ুসহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ভ্যালু চেইন আধুনিকীকরণ ও কৃষিপণ্যের রপ্তানির ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

এছাড়া, কৃষিখাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, এ বৃহৎ সম্মেলনটি সফলভাবে আয়োজনের জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে জোরে অগ্রসর হচ্ছি। এ সম্মেলনটিকে সফলভাবে আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই, যাতে করে ভবিষ্যতে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশে সম্মেলন আয়োজনে আগ্রহী হয়।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী জানান, এবারের সম্মেলনে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে খাদ্য ও কৃষির বর্তমান অবস্থা, এ অঞ্চলে জলবায়ুসহনশীল কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয়, এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, জুনোটিক বা প্রাণিবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচে গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার চিহ্নিতকরণ ও হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে করণীয়, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত বিনিয়োগ প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

জানান হয়, সম্মেলনের মূল অধিবেশন/প্লেনারি সেশন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কান্ট্রি শোকেসিং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হবে। ৪ দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দুই দিন (৮-৯ই মার্চ) সিনিয়র অফিসিয়াল/কৃষি সচিব ও উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের মিটিং এবং শেষ দুই দিন (১০-১১ ই মার্চ) মন্ত্রিপর্যায়ের/কৃষিমন্ত্রীদের মিটিং হবে।

মন্ত্রিপর্যায়ের মিটিং বা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১০ই মার্চ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কান্ট্রি শোকেসিং থাকবে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে ১৭টি প্রদর্শনী স্টল থাকবে। ৯ই মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, ৯ই মার্চ প্রেসিডেন্টের সাথে এবং ১৩ই মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সাথে এফএও’র মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) একটি বিশেষায়িত সংস্থা; যা বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা নিরসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এফএও’র সদস্যভুক্ত হয়। এফএও’র একটি আনুষ্ঠানিক ফোরাম হিসেবে প্রতি দুই বছর পর পর এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে সদস্য দেশসমূহের কৃষিমন্ত্রী এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ খাদ্য ও কৃষির চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করে থাকেন। প্রথম আঞ্চলিক সম্মেলন ১৯৫৩ সালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ব্রিফিংয়ে জানান হয়, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সুরক্ষায় ও কোভিড প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে।

Leave a Reply