অনড় বিএনপি, সঙ্কট মনে করে না আ.লীগ

13/10/2013 7:13 pmViews: 9

bnp-প্রতিবেদক :আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বিরোধী দলের ডেডলাইন। এরপর থেকে কী হবে তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বিরাজ করছে। সবার মনেই এক কথা, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে সমঝোতা হবে, না-কি সংঘাত ও সংঘর্ষে রক্তাক্ত হবে রাজপথ। সরকারের মেয়াদ একেবারে শেষ পর্যায়ে হলেও সমস্যা সমাধানে আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। দুই দলই তাদের অবস্থানে অনড়। এ প্রসঙ্গে দৈনিক বর্তমানের সঙ্গে আলাপকালে সরকারি দল, বিরোধী দল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

সরকারি দল আলোচনার কথা বললেও দেশে তেমন কোনো সঙ্কট দেখছেন না। তারা বলছেন, বিরোধী দল আলোচনা করতে চাইলে সংসদে আসতে হবে। তাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে সংসদে দিতে হবে। তাদের কেউ কেউ বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে।

অন্যদিকে বিরোধী দল বলছে, নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে। আর সেজন্য দুই দলের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান আগে সংসদের বাইরে হতে হবে। সংসদে তারা কোনো প্রস্তাব দেবেন না। এমনকি সংলাপে বসার আগে নির্বাচনকালীন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা থাকতে হবে।

দুই দলের যখন এমন মনোভাব, তখন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, উভয় দলের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন হলে সরকারপ্রধান কে তা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হবে না। অবশ্য বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ আপাতত সমস্যার সমাধান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন।

সরকার ও বিরোধী দলের নেতারাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অভিমত নিচে আলাদা আলাদা করে তুলে ধরা হলো—

কাজী জাফরুল্লাহ: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বর্তমানকে বলেন, বিরোধী দল সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আল্টিমেটাম দিল। তারা সমাধান চাইলে আলোচনায় আসত। সংলাপে বসার আগ্রহ তাদের নেই। প্রধানমন্ত্রী তাদের সংসদে এসে আলোচনার কথা বলেছেন। কিন্তু তারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নিয়ে রাজপথে জ্বালাও-পোড়াও করছে।

তিনি বলেন, আমরা ২৫ অক্টোবরকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ বিরোধী দলের নেতা এ দিনটি ধরে হুমকি দিয়েছেন। হয়তো এই দিনটি নিয়ে উনার কোনো নীলনক্শা আছে। এর আগে ৪ মে তিনি আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন, আমরা বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব দেইনি। পরদিন ৫ মে দেখলাম হেফাজতকে দিয়ে তিনি কি করতে চেয়েছিলেন। এ কারণে আমরা উনার হুমকিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। বিষয়টির ব্যাপারে আমরা খুবই সিরিয়াস।

মতিয়া চৌধুরী: নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময় হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচন সংবিধানের আলোকে হবে। এতে নড়চড় হবে না। তবুও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই বিভিন্ন সময়ে বিরোধী দলকে আলোচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা সংসদে এসে আলোচনা করতে পারে। সংসদ অধিবেশন চলছে। সংসদে এসে তারা তাদের কথা তুলে ধরতে পারে।

তিনি বলেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। প্রচার করা হলো আওয়ামী লীগ হাজার হাজার মানুষ মেরেছে। এখন মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের পর সারা দুনিয়া জেনে গেছে কারা মানুষ মারে। ইজাহার এখন পালিয়ে আছে কেন। মিথ্যা কথা বলে ইসলাম কায়েম করতে চায়। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিষয়ে নাক গলানো কূটনীতিকদের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব ব্যাপারেই তারা নাক গলায়। যারা বলে চতুর্থ শ্রেণীর বেশি মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারবে না, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার সেখানে গিয়ে তাদের মনোবল চাঙা করে এলো। শুধু ২৫ অক্টোবর কেন, সব দিনই জনজীবন স্বাভাবিক রাখাটাই সরকারের কর্তব্য। কেউ উন্মাদের মতো আচরণ করবে এটা আমরা চাই না। হেফাজত সমাবেশ করে চলে যাওয়ার কথা বলে প্রতিশ্রুতি রাখেনি। সেটা তাদের বিষয় কিন্তু আমরা কেন ধরে নেব যে কেউ উন্মাদের মতো আচরণ করবে।

দীপু মনি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেছেন, সংবিধানের আওতায় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রধান দুই দলের মধ্যে সংলাপের সুযোগ আছে। জনগণের স্বার্থে সে সুযোগ সবারই গ্রহণ করা উচিত। রবিবার সকালে চাঁদপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে দেশে ছয় হাজার নির্বাচনে ৬৪ হাজার ব্যক্তি নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিটি নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আমাদের নির্বাচন কমিশন বর্তমানে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও শক্তিশালী। আর সেটি প্রমাণ দিয়েছে প্রতিটি নির্বাচনে। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এবং সংবিধানের আওতার মধ্যে সে নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখব।’

ড. খন্দকার মোশাররফ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৫ অক্টোবরের সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে হলে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবিটি সংবিধান সংশোধন করে সন্নিবেশিত করতে হবে। তারপরে কে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধান হবে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হতে হবে। এ আলোচনার প্রস্তাবও সরকারের পক্ষ থেকে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে অনেক সময় দিয়েছি। কঠোর কোনো আন্দোলনেও যাইনি। এখন সরকারকে জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আলোচনার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা অর্থাত্ আগামী নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হতে হবে।’ তিনি এও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এটি আমাদের অবস্থান। এ থেকে আমরা নড়ব না। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সংসদের বাইরে হতে হবে। সংসদে তারা কোনো প্রস্তাব দেবেন না।

মাহবুবুর রহমান: স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সঙ্কট নিরসন করতে হলে আগে সংলাপে বসতে হবে। দুই দলকে ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। তা হলে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে সরকার কাঠামো অবশ্যই নির্দলীয় হতে হবে। ওই সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সবাইকে এ সত্য অনুধাবন করতে হবে। গণতন্ত্র না থাকলে কী হয়, অতীতে কী হয়েছে এবং নিকটঅতীতের অভিজ্ঞতা ভুলে গেলে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, সরকারকে নমনীয় হতে হবে। বিরোধী দল জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন অর্থাত্ ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত কঠোর কর্মসূচি দেয়নি। কারণ বিএনপি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়। কিন্তু সরকারি দলের নেতা ও এমপিদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তারা বিরোধী দলের এই অবস্থানকে ‘দুর্বলতা’ ভাবছে।

সাদেক হোসেন খোকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা বর্তমানকে বলেন, আসন্ন ২৫ অক্টোবরের সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে নির্দলীয় সরকার প্রশ্নে ফলপসূ আলোচনা হতে হবে। সরকারী দল হিসেবে এজন্য আওয়ামী লীগকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের পক্ষ থেকেই এ আলোচনার প্রস্তাব আসতে হবে। আর প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে ওই প্রস্তাবে সাড়া দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনার প্রস্তাব পেলে তাতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সাড়া দেবে বলে জানান দলের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক সাদেক হোসেন।

শমসের মবিন চৌধুরী: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বর্তমানকে বলেন, আসন্ন সঙ্কট থেকে উত্তরণ পেতে হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে নির্দলীয় সরকার বিষয়ে সমঝোতা হতে হবে। বিএনপি সব সময় সমঝোতার পক্ষে। এজন্য তারা প্রস্তুত। সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জুন বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে জানতে চেয়েছেন, দুই দলের মুখপাত্র পর্যায়ে কোনো আলোচনা হলে বিএনপি তাতে রাজি কি না? খালেদা জিয়া চীনের রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, আলোচনার জন্য তার দল তৈরি। তবে ভবিষ্যত্ রাজনীতির গতি-প্রকৃতি ও নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। শমসের মবিন বলেন, সরকার চাইলে আজই হতে পারে এ সমঝোতা। কিন্তু তারা কি রাজি? —এমন প্রশ্ন রাখেন এই বিএনপি নেতা।

ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক: বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের জন্য সংসদের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি নির্দলীয় সরকার গঠন করার পক্ষে অভিমত রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ওই নির্দলীয় সরকারের যারা প্রতিনিধিত্ব করবেন তারা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না। তাদের নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। তাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে।

এই সরকারের প্রধান কে হবেন এ প্রশ্নের জবাবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক বলেন, সঙ্কট নিরসনে উভয় দলেরই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন ঘটালে সরকারপ্রধান নিয়ে কোনো জটিলতার সৃষ্টি হবে না। তিনি বলেন, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের যে কোনো একজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলেই তার স্থলে সমঝোতার ভিত্তিতে অন্য যে কাউকেই নির্বাচিত করে আনা সম্ভব। তবে উভয় দলকেই— প্রধান বিরোধী দল ও ক্ষমতাসীন দল সঙ্কট নিরসনের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ জাতি কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা ও সঙ্কট চায় না। তারা চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।

ড. শাহদীন মালিক: বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের কোনো পথ খোলা নেই। দেশ অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতার দিকে চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি কয়েকদিন থাকবে। এরপর অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সংলাপের জন্য যে চাপ সৃষ্টি হবে তাতে হয়তো একটা সমঝোতার আশা করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সমস্যা হলো আমাদের তিন বড় রাজনৈতিক দলের প্রধানদের নিয়ে। তিন দশকের বেশি তারা ক্ষমতায় আছেন। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তারা দলে একনায়ক। এই একনায়করা সমঝোতায় বসতে চায় না। এটাই হলো বর্তমান দুনিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসের শিক্ষা। এই একনায়করা কখনও স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়েন না। দলের ক্ষমতা তারা আঁকড়ে রাখেন। এ কারণেই সমঝোতার সম্ভাবনা খুবই কম।

ড. আকবর আলি খান : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, চলমান রাজনৈতিক কিংবা নিকটভবিষ্যতে যে অস্থিরতার আশঙ্কা করা হচ্ছে, সব বিষয়ের সমাধানে সমঝোতা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। তবে সমঝোতার বিষয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলগুলোর মানসিকতার পরিবর্তন না হলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। এক্ষেত্রে অন্য কোনো পক্ষের কিছু করারও নেই।

ড. ইফতেখারুজ্জামান: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের স্বার্থ ও প্রত্যাশার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। আমি বলব, সকল মতভেদ ভুলে সঙ্কট সমাধানে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট, বিশেষ করে দুই নেত্রী আলোচনায় বসবেন। কারণ তারা তো গণতন্ত্রের জন্যই রাজনীতি করেন। যদি তাই হয়, তাহলে অবশ্যই তারা চাইবেন না গণতন্ত্র ব্যাহত হোক।

Leave a Reply