অনেক লক্ষ্যের এক সিরিজ শুরু আজ
অনেক লক্ষ্যের এক সিরিজ শুরু আজ
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ ছিল দীর্ঘ এক আক্ষেপ মেটানোর পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে র্যাঙ্কংয়েও এক ধাপ এগিয়ে যায় টাইগাররা। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন স্বপ্ন দেখার। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে মাত্র একটি ম্যাচ জিতলেই ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সাত নাম্বারে চলে আসবে বাংলাদেশ। এমনকি এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬টি ওয়ানডের দুটিতে জয় পেলেই ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফিতে ৯ বছর পর খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ দল। র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ বাংলাদেশের জন্য হবে অনেক বড় অর্জন। কিন্তু ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ম্যাচের আগে তা ভেবে চাপ নিতে চান না। তার লক্ষ্য একটি করে ম্যাচ। ভারতের বিপক্ষে আজ ৩টায় মাঠে গড়াবে দিবা-রাত্রির প্রথম ম্যাচটি। এ ম্যাচটিতে জয়কেই বড় লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘ যে কোন সিরিজে প্রথম ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। যে দল প্রথম ম্যাচটিতে জয় পাবে তাদের জন্য পুরো সিরিজেই সাফল্যের দরজা খোলা থাকবে। আর আমরা এখন এমন পরিসংখ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে যে ওই চিন্তাটা মাথায় আনা স্বাভাবিক। তবে এটা কোন না কোন সময় অতিরিক্ত প্রেসার হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমরা চাচ্ছি যে ক্রিকেটাররা এটা নিয়ে না ভাবুক। যারা দলে আছে যারা খেলবে সবাই ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলাটাই ভাল।’
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভারত ওয়ানডেতে ২৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ৩ বার। হেরেছে ২৫টিতে আর বৃষ্টির কারণে হয়নি একটি ম্যাচ। আজ বাংলাদেশ দল ৬০তম দ্বি-পাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেলতে মাঠে নামবে। তবে ভারতের বিপক্ষে এটি চতুর্থ। দ্বি-পাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে ২০০৪ সালে মাত্র একটি জয় পায় বাংলাদেশ। এরপর ২০০৭ ও ২০১৪ সালে দুটি সিরিজ খেলে একটিতেও জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা। ২০০৭ বিশ্বকাপের পর আবারও ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় জয় আসে এশিয়া কাপে। এবার অবশ্য দিন বদলের গান শুনিয়ে মাঠে নামছে মাশরাফি বাহিনী। তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাস পরিবর্তনের সিরিজ শেষে ভারতের বিপক্ষে সিরিজটিকে অর্জনে পরিপূর্ণ করতে চায়। এ জন্য দলের ব্যাটিং শক্তির পাশপাশি এগিয়ে রাখলেন পেস বোলিংকেও। আজ বাংলাদেশ দলে অভিষেকের সম্ভাবনা রয়েছে তরুণ উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাসের। তবে তিনি ওপেনিং করবেন নাকি ওয়ান ডাউনে খেলবে তা অজানা। কারণ পাকিস্তান সিরিজে তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে সফল হয়েছেন আরেক তরুণ সৌম্য সরকার। তাই লিটনের অভিষেক হলে তিন নাম্বারে খেলতে পারেন।
অন্যদিকে মিডল অর্ডারের ব্যাটিং শক্তি হিসেবে মুশফিকুর রহীম ও সাকিব আল হাসানতো আছেই। তারপরই লেট মিডল অর্ডারে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিবেন তরুণ নাসির হোসেন ও সাব্বির রহমান রুম্মান। আর ৮ নাম্বারে নামবেন অধিনায়ক মাশরাফি। এই পেস বোলার অধিনায়ক হওয়াতে সুযোগ থাকছে আরও দুজন পেসার রুবেল হোসেন ও তাসকিনের খেলার। তবে ভারতকে চমকে দিয়ে কিছুটা ইনজুরি কারণে রুবেল হোসেনকে বিশ্রাম দিয়ে খেলানো হতে পারে আরেক তরুণ মোস্তাফিজুর রহমানকে। সে হিসেবে দলে অভিষেক হতে পারে দুটি। আর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান স্পিন বিভাগের নেতৃত্ব দিবেন। দলের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের সামনেও রয়েছে ব্যক্তিগত অর্জনের রেকর্ড। মাত্র ৫টি উইকেট নিলে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডেতে তুলে নিবেন ২’শ উইকেট। মাত্র ৮টি উইকেট নিলে মাশরাফিও ছুঁয়ে ফেলবেন ২’শ উইকেট। মাশরাফি ও মুশফিকের জন্য আজকের ম্যাচটি হবে নতুন মাইলফলক। বাংলাদেশের হয়ে আজ তারা দু’জনই খেলবেন ১৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ। তবে মুশফিকুর রহীমের জন্য ১৫০তম ম্যাচটি কিছুটা ব্যতিক্রমই হতে পারে। কারণ আঙুলের ইনজুরি কারণে টেস্টে তিনি উইকেট কিপিং করেননি। আজ তিনি সুস্থ বোধ না করলে তার পরিবর্তে উইকেটের পিছনে দেখা যাবে লিটন কুমার দাসকেই। দলে স্পেসালিস্ট স্পিনার হিসেবে থাকছেন আরাফাত সানি।
অন্যদিকে ভারতের অধিনায়ক ধোনির নেতৃত্বে দলের ব্যাটিং শক্তি শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, আজিঙ্কা রাহানে ও সুরেশ রায়না। এর মধ্যে টেস্টে ১৭৭ রান করে ধাওয়ান নিজেকে এগিয়ে রেখেছেন। টেস্ট সিরিজে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের স্পিন বিভাগের ভার সামলাবেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সঙ্গে আছেন রবীন্দ্র জাদেজা। এ ছাড়াও পেস আক্রমণে ভুবনেশ্বর কুমার, উমেশ যাদব ও মোহিত শর্মাকে দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশের মতই দুই স্পিনার ও তিন পেসার নিয়ে দল সাজাতে পারে ভারত।